সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর মিঞাপাড়ায় অবস্থিত বাড়িটি পরিদর্শনকালে তিনি এ আশ্বাস দেন। এ সময় রাজশাহীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ঋত্বিক ঘটকের বাড়িটি ঐতিহ্যবাহী। এই বাড়ি রক্ষায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করবো। আইন অনুযায়ী সরকার বাড়িটি রক্ষায় ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, ঋত্বিক ঘটকের বাড়িটি বিভিন্ন সময় ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। স্বৈরশাসক এরশাদ ১৯৮৪ সালে এই বাড়িটি হোমিওপ্যাথি কলেজকে দিয়ে দেন। তখন কলেজকে অন্য কোথাও জায়গা দিয়ে বাড়িটি সংস্কৃতি চর্চার জন্য উন্মুক্ত রাখা যেত, কিন্তু এরশাদ তা করেননি।
আপাতত বাড়িটির কোনো ক্ষতি না করতে হোমিওপ্যাথি কলেজকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
রাজশাহী মহানগরীর মিঞাপাড়ার ওই বাড়িতেই ঋত্বিক ঘটকের শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্যের একটি বড় অংশ কেটেছে। এখানে থাকার সময় ঋত্বিক ঘটক রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল ও রাজশাহী কলেজে পড়েছেন। এই বাড়িটিতে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীও কিছুদিন বসবাস করেছেন।
তৎকালীন রাজশাহীর সাংস্কৃতিক জগতে ঋত্বিক ঘটক সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সবার মধ্যমণি হয়ে উঠেছিলেন। নাট্যান্দোলন ও সাহিত্য সম্পাদনায় যুক্ত ছিলেন। রাজশাহী কলেজ এবং মিঞাপাড়ার সাধারণ গ্রন্থাগার মাঠে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়েও নাট্যচর্চা করেন ঋত্বিক ঘটক।
এছাড়া, রাজশাহী থাকাকালীন ঋত্বিক ঘটক ‘অভিধারা’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। তৎকালীন কল্পনা সিনেমা হলে ‘ভাবীকাল’ নামে একটি চলচ্চিত্রের ব্যানারও তিনি এঁকেছিলেন বলে জানা যায়।
১৯৮৯ সালে নামমাত্র মূল্যে বাড়িটি রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজকে ইজারা দেওয়া হয়। তখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষই বাড়িটি ব্যবহার করে আসছে। বাড়িটির একাংশে ইতোমধ্যেই বহুতল ভবন নির্মাণ করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আরেক অংশে যেসব কক্ষে ঋত্বিক ঘটক থাকতেন, সেসব কক্ষও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি সে পাশেই কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী সাইকেল গ্যারেজ নির্মাণের জন্য বাড়িটির একটি অংশ ভাঙা হয়। বাড়ি ভাঙার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও চলচ্চিত্রকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
এসএস/পিএম/এইচএডি/