রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (কেআইবি) ‘দি ফিউচার প্ল্যানিং আরবান ট্রান্সপোর্টেশন ইন ঢাকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, শহরের সমস্যা সমাধানে ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ ও দায়িত্ব বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে।
এমএ মান্নান বলেন, আমরা বিকেন্দ্রীকরণের চেষ্টা করেও অনেকটা ব্যর্থ হয়েছি। আমাদের রেল স্টিমারের অফিস করা হয়েছিল বরিশাল ও চট্টগ্রামে কাজ হয়নি। কর্তাব্যক্তিরা সবাই ঢাকায় বসে থেকে কাজ করতে চায়। শুধু অফিস বিকেন্দ্রীকরণ করলে হবে না অফিসের যে মূল বিষয় ফান্ড বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, অর্থনীতিকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো করতে পারলেই শহরের সমস্যা অনেকাংশেই কমে যাবে বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, প্ল্যানিং বাস্তবায়নে আমরা অনেকটাই দুর্বল। প্ল্যানিং করি কিন্তু সেটা বাস্তবায়ন করতে পারি না। এগুলো সবার সহযোগিতা নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। গণতন্ত্রকে সম্মান করতে গেলে গণতন্ত্রের কাটা সহ্য করতে হবে। রাজধানীর জ্যাম গণতন্ত্রের জন্য কাটা। এগুলোকে সমন্বয় করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি ও মুক্ত আকাশের উপদেষ্টা সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই) সভাপতি প্রকৌশলী এস এম খোরশেদ আলম এবং মুক্ত আকাশের সম্পাদক ও প্রকাশক প্রকৌশলী মো. সামসুল আলম প্রমুখ।
সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আরবান হ্যাবিট্যাট কনসালট্যান্টসের চেয়ারম্যান স্থপতি পরিকল্পনাবিদ তানউইর নেওয়াজ।
বক্তারা বলেন, সামান্য দূরত্বের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতেও মানুষের সীমাহীন দুর্ভোগ ও সময়ের অপচয় এখন অস্বাভাবিক মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে। হাঁটার গতির ন্যায় ঘণ্টায় প্রায় ৫ কিলােমিটারে নেমে এসেছে যন্ত্রচালিত যানবাহনের গতি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ১২ বছর আগেও ঢাকায় যানবাহনের এ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২১ কিলােমিটার। সাম্প্রতিককালের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, যানজটের কারণে ঢাকা মহানগরীতে দৈনিক ৫০ লাখ ঘণ্টার নিদারুণ অপচয় ঘটছে, যার আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। নিঃসন্দেহে একটি দেশ বা শহরের জন্য এটি উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার বিষয়।
বক্তারা আরও বলেন, রাজধানীতে প্রতিদিন লােকসংখ্যা বাড়ছে, বিদ্যমান যানবাহনের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে বিপুলসংখ্যক নতুন নতুন যানবাহন। কিন্তু সড়কের বেহাল দশা ও সংখ্যা থেকে যাচ্ছে সেই আগের মতোই। সরকারের ভিশনারী প্রকল্পগুলো বিশেষ করে, মেট্রোরেল স্থাপনের কাজ চলমান থাকায় নগরবাসীর দুর্ভোগ অবর্ণনীয় পর্যায়ে পৌছেছে। চলমান পরিস্থিতি উত্তোরণে যেসব পরিকল্পনা বা সুপারিশ গৃহীত হয়েছে বা হচ্ছে তার বেশিরভাগই স্বল্পমেয়াদী ও অদূরদর্শী, সমম্বিত পরিকল্পনা উল্লেখযােগ্যভাবে দৃশ্যমান নয়। সাড়া দেশে যাত্রীবান্ধব গণপরিবহন ব্যবস্থা কিভাবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই যাত্রীসেবার মানও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে, বেড়ে যাচ্ছে দুর্ঘটনা ও সংখ্যা। চলমান হতাশাজনক প্রেক্ষাপটে এ সেমিনার কিছুটা হলেও আলাের পথ দেখাবে , ইতিবাচক পথরেখার সন্ধান মিলবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ রকম একটি সেমিনারের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিঃসন্দেহে অপরিসীম বলেও সবাই স্বীকার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
এসএমএকে/ওএইচ/