ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দেড়লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসলেন অভিযোগকারী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
দেড়লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসলেন অভিযোগকারী পুলিশের সঙ্গে দুই আসামী। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: দেড়লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মিথ্যে অভিযোগ এনে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে থানায় মামলা করতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেলেন অভিযোগকারী।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল মেট্রোপলিটনের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. খাইরুল আলম জানিয়েছেন, বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানার হরিনাফুলিয়ার নতুন হাটখোলা এলাকার গরু ব্যবসায়ী মো. পান্নু মোল্লা ছিনতাইয়ের এক অভিযোগ নিয়ে আসেন।

অভিযোগে পান্নু মোল্লা দাবি করেন, বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাড়ে ৮টার দিকে তিনি গরু কেনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে সোনামিয়ার পোল সংলগ্ন এলাকায় আউয়াল সিকদারের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি।

পথে বাড়ির পোল এলাকায় পৌঁছলে তিনজন লোক মোটরসাইকেলে এসে তার গতিরোধ করে। পরে ছুরির মুখে মারধর করে তার কাছ থেকে গরু কেনার এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরমধ্যে পান্নু মোল্লা ছিনতাইকারীদের মধ্যে মো. মাসুম (২৫) নামে একজনকে চিনতে পারেন। মাসুম এয়ারপোর্ট থানার কটুরাকাঠি এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় তিনি একজন মুদি ব্যবসায়ী।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, যদি ছিনতাই করার কথা পান্নু মোল্লা আর কারও কাছে বলেন, তাহলে তাকে মেরে ফেলা হবে।

উপ-পুলিশ কমিশনার মো. খাইরুল আলম জানান, অভিযোগ তদন্তে কথিত ছিনতাইকারী মাসুমকে আটক করা হয়। আটকের পর মাসুম দাবি করে তার খালাতো ভাই শাহাদাত অটোরিকশা চালান। ১৫ দিন আগে শাহাদাতের অটোরিকশায় অভিযোগকারী পান্নু মোল্লা সোনামিয়ার পোল থেকে নতুনহাটে যান। সেসময় ভাড়া আট টাকা চাইলে পান্নু মোল্লা তার বদলে পাঁচ টাকা দিতে চান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে চালক শাহাদাতকে মারধর করেন পান্নু মোল্লা।

এ ঘটনায় শাহাদাত এসে তার খালাতো ভাই ও মুদি ব্যবসায়ী মাসুমকে বলেন। ঘটনার পর মাসুম ও শাহাদাত মিলে পান্নু মোল্লাকে বিষয়টি জানার জন্য তার কাছে যান। কিন্তু পান্নু মোল্লা লোকজন নিয়ে তাদের দু’জনকে মারধর করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে মাসুম পান্নু মোল্লাকে মারধরের পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৬ ফেব্রুয়ারি সকালে নিজ এলাকায় পান্নু মোল্লাকে পেয়ে মারধর করেন মাসুম। তবে ছুরি দিয়ে ভয় দেখানো বা টাকা পয়সা ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে পুলিশকে জানান তিনি।

পরে উভয়কে মুখোমুখি করা হলে পান্নু মোল্লা তার অভিযোগে উল্লেখকৃত ছিনতাইয়ের ঘটনা মিথ্যে বলে স্বীকার করেন। এসময় তিনি দাবি করেন, অন্যের বুদ্ধি নিয়ে তিনি এ কাজ করেছেন।

মো. খাইরুল আলম জানান, মামলা দেওয়ার আগে অভিযোগটি খতিয়ে দেখায় মূল ঘটনার রহস্য যেমন জানা হলো, তেমনি কোনো নিরীহ ব্যক্তির হয়রানি হচ্ছে না। তবে প্রাথমিক তদন্তে যেহেতু উভয়ের মধ্যে মারামারি সংগঠিত হওয়া এবং বাদীর মিথ্যে ছিনতাইয়ের অভিযোগ দেয়ার বিষয়টি প্রমানিত হয়েছে। তাই মেট্রো অধ্যাদেশ অনুযায়ী পুলিশই বাদী হয়ে উভয়ের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
এমএস/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।