এলাকাবাসীর অভিযোগ, সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে বেড়েছে মশার উপদ্রব। এতে ডেঙ্গুসহ মশা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জয়দেবপুর, ধীরাশ্রম, বোর্ডবাজার, ভোগড়া, কোনাবাড়ী, বাসন, ইসলামপুর, কাশিমপুর, নাওজোর, টঙ্গী, বাঘিয়া, মজলিশপুর, গাছা, কড্ডাসহ নগরের প্রায় সবকটি এলাকায় মশার প্রকোপ বৃদ্ধির খবর পাওয়া গেছে। সন্ধ্যার পর মশার কারণে কোথাও বসে বা দাঁড়িয়ে থাকা যাচ্ছে না। ক্ষতিকর হলেও মশার কয়েল ও স্প্রে ব্যবহার করে কিছুটা স্বস্তি নিশ্চিত করছে মানুষ। মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি তাদের।
এর আগে গত বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন এলাকায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু মশা নিধনে ওষুধ ছেটানো হয়। কিন্তু এবারে তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক-মহাসড়কের পাশে জলাবদ্ধ স্থান, ময়লার ভাগাড়সহ নগরের বিভিন্ন স্থানে মশার বিস্তার ঘটছে। অসহনীয় হয়ে উঠছে জনজীবন।
বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভোগড়া এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম জানান, মশার বংশ বিস্তারের জায়গাগুলোতে ওষুধ প্রয়োগ না করায় এদের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সন্ধ্যার পর থেকে ঘরে-বাইরে মশার যন্ত্রণায় টেকা দায় হয়ে পড়েছে। অনেকেই মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে দিনে-রাতে মশার কয়েল ও স্প্রে ব্যবহার করছেন। তবে চিকিৎসকরা বলেন, নিয়মিত মশার কয়েল ও স্প্রে ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ও হুমকিস্বরূপ।
কোনাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা সোহেল সরকার জানান, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্ট কারখানাগুলোর দূষিত বর্জ্যপানি আশপাশের খাল-বিল-নদী-নালায় ছড়িয়ে পড়েছে। এসব দূষিত পানিতে ব্যাপক হারে মশা বংশ বিস্তার করছে। সন্ধ্যা হলে বেড়ে যায় মশার প্রকোপ। মশার কারণে কোনো কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। এতে মানুষের বিভিন্ন রোগব্যাধি হতে পারে। মশার স্প্রে ও মশার কয়েল ব্যবহার করেও তেমন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে এ প্রেক্ষাপটের কর্তৃপক্ষ কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আব্বাছ উদ্দিন খোকন জানান, মেয়র সাহেবের নির্দেশে পর্যায়ক্রমে সব এলাকায় মশা নিধনের ওষুধ ছেটানো হবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিদর্শক মদন চন্দ্র দাস বলেন, মেয়র মহোদয় সিঙ্গাপুর থেকে যে ওষুধ এনেছিলেন ওইটার মজুদ শেষ হয়ে গেছে। পুনরায় মশার ওষুধ কেনার ব্যাপারটি প্রক্রিয়াধীন আছে। কিন্তু বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে সবকিছু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এস এম সোহরাব হোসেন বলেন, মশা নিধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রায় ৫০টি ফগার মেশিন বিভিন্ন জোনে রাখা আছে। আরও কিছু মেশিন কেনার পরিকল্পনা আছে। যে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফগার মেশিন ও ওষুধ চাচ্ছেন আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তা দিচ্ছি। মশার ওষুধও পর্যাপ্ত আছে। তবে আরো কিছু ওষুধ আনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। মেয়র মহোদয় নিজে সিঙ্গাপুর থেকে মশার ওষুধ কিনে আনেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২০
আরএস/এইচজে