ঢাকা, শনিবার, ০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দেশে ধনী-গরীবের বিভেদ বাড়ছে: মুহিত 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০২০
দেশে ধনী-গরীবের বিভেদ বাড়ছে: মুহিত 

সিলেট: দেশে ধনী-গরীবের বিভেদ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। 

শনিবার (৭ মার্চ) বিকেলে সিলেট নগরের রিকাবীবাজারের জেলা স্টেডিয়ামে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত মুজিববর্ষে ২০ দিনের কর্মসূচি অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আবুল মাল আব্দুল মুহিত।

সাবেক অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে ধনী-গরীবের বিভেদ বাড়ছে।

আমরা চেষ্টা করছি সামাজিক নিরাপত্তা, একটা ব্যবস্থা করে তার সমাধান করতে। নয়তো ধনী-দরিদ্রের তফাতটা বাড়তেই থাকবে।
 
এদিন ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর জনসভায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী ১২ জনকে সম্মাননা জানায় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। অনুষ্ঠানে তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন সাবেক অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সাবেক শিক্ষামন্ত্রীসহ অতিথিরা।  
 
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল মাল আব্দুল মুহিত আরও বলেন, আমাদের দেশ যখন স্বাধীন হয়, তখন আমরা ৭০ ভাগ মানুষ গরীব ছিলাম। এখন আমরা সেটাকে নিয়ে এসেছি ২২.৪ শতাংশে। আমরা অনবরত এটা কমাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ২০৪০ সালে আমরা হবো উন্নত দেশ। যেখানে কোনো অভাব থাকবে না।
 
তিনি বলেন, আমি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি, ২০৪০ সালে রাষ্ট্রের ওপর নির্ভর থাকবে, দেশে এ সংখ্যা হবে মাত্র ৭ থেকে ১০ শতাংশ। এইসব মানুষের জন্য আমাদের রাষ্ট্রের কিছু করতে হবে। আর অন্যান্য মানুষ নিজে নিজে তাদের ব্যবস্থা করবে, কোনো অসুবিধা হবে না। আল্লাহর মেহেরবানি থাকলে সেই উজ্জ্বল দিনগুলি আমিও দেখে যেতে চাই।  
 
বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু একটা কথা বলে গিয়েছিলেন, আমি সবসময় অন্যদেরও তা স্মরণ করিয়ে দিই। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি সোনার বাংলা গড়বো। সোনার বাংলার ভিত্তি হচ্ছে মাটি এবং মানুষ। আমার মাটি হচ্ছে ভিত্তি আর মানুষ সৃজন করবে। ' আমাদের মানুষ ৭ কোটি থেকে ১৬ কোটি হয়েছে। জমির পরিমাণ কমছে, কিন্তু ফসল উৎপাদন বেড়েছে। আমরা এখন ৪০ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করি। বাংলাদেশের যখন জন্ম হয়, তখন আমরা ১১ লাখ টন খাদ্যশস্য উৎপাদন করতাম। ফলে এখন কেউ অভাবে মারা যায় না। আর যদি কেউ এ কথা বলেন, তাহলে প্রলাপ করা ছাড়া তা আর কিছুই নয়। বুঝতে হবে, তিনি অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে বলছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেন বলেন,  ১৯৭১ সালের পহেলা মার্চ, আমরা জানতে পারলাম ইয়াহিয়া খান সংসদ স্থগিত করেছে। তখন চাকরি বাদ দিয়ে চলে আসি সেই পূর্বাণী হোটেলে। জানলাম পূর্বাণী হোটেলে বঙ্গবন্ধু আছেন। আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির সভা চলছে। সেখানে আমরা সারাক্ষণ স্লোগান দিতে থাকি। আমাদের এক দফা এক দাবি ছিল- স্বাধীন বাংলাদেশ চাই। বঙ্গবন্ধু বললেন, ৩ তারিখ ভাষণ দেবেন। তাই ১ তারিখ থেকে আমরা রাস্তায়-রাস্তায় ঘোরাঘুরি শুরু করতে থাকি। এরপর তোফায়েল ভাই বললেন, ৭ তারিখে জাতির উদ্দেশ্যে রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু।
 
'১৯৭১ সালে যখন রাওয়ালপিন্ডিতে গেলেন, তখন আমি সার্বক্ষণিক বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলাম। ৭ মার্চ সকাল ১১টার দিকে রেসকোর্স ময়দানে আমরা উপস্থিত হই। তখন মানুষ ক্রমান্বয়ে আসছিল। আকাশে বিমান ঘোরাঘুরি করতেছে দেখি। তখন সবাই বললো, এরা যখন বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন, তখন বোমা ফেলবে। আমরা আশা-নিরাশার মধ্যে ছিলাম। এরপর বঙ্গবন্ধু আসলেন। আমরা কতক্ষণ পরপর স্লোগান দিতে থাকি। সেদিনের স্পিড আপনাদের বোঝাতে পারবো না। যত লোক ছিল সবার মধ্যে আলাদা স্পিড চলে আসে। বঙ্গবন্ধু আসলেন এবং বললেন ভাইয়েরা আমার…।  

'আমরা যারা সেখানে উপস্থিত ছিলাম, সবাই জানি বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছেন। সেদিনের ১৮ মিনিটের বক্তব্যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। বক্তব্যে সুকৌশলে সবগুলো বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। দিকনির্দেশনা দিয়েছে। নির্যাতিত মানুষের অধিকার কীভাবে আদায় করেছিলেন। তারপর তিনি আমাদের হুকুম দিয়েছেন। তখন আমাদের একটি পথ ছিল, স্বাধীনতার পথ। ৭ই মার্চের বক্তৃতা স্বাধীনতার ভিত্তি রচনা করে দিয়েছে।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য ছিলাম। ৭ই মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা হয়। ২৬ মার্চ ছিল কেবল আনুষ্ঠানিকতা। বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল বঞ্চিত, শোষিত মানুষকে উজ্জীবিত করার।  

বাংলাদেশ সময়: ০৪২৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০২০ 
এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।