ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ছেঁউড়িয়ায় দ্বিতীয় দিনে চলছে লালন স্মরণোৎসব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২০
ছেঁউড়িয়ায় দ্বিতীয় দিনে চলছে লালন স্মরণোৎসব

ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়ি থেকে: সাম্প্রদায়িকতা, সহিংসতা বা সংঘাত নয়, বরং লালন ফকির প্রচার করেছেন তার জাতপাতহীন মানবধর্ম। মানবতার প্রাণপুরুষ এই বাউল সম্রাটের জীবন-কর্ম, ধর্ম-দর্শন, মরমী সংগীত ও চিন্তা চেতনা থেকে শিক্ষা নিতে ভক্ত অনুরাগী, দর্শনার্থী এখন কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়িতে। 

সোমবার (০৯ মার্চ) সকাল থেকে চলছে দ্বিতীয় দিনের মতো লালন স্মরণোৎসব।

গুরু-শিষ্যের মধ্যে চলছে ভাবের আদান প্রদান।

বছরে দুইবার সাধুরা আসেন এই ফকির লালন সাঁইজির ধামে। ১লা কার্তিক লালন তিরোধান দিবস এবং দোল উৎসব। দুবারে এ আয়োজনের সাধুসঙ্গ করে সাধুরা। বাউল সঙ্গে গুরু ভক্তি প্রধান হওয়ায় সব সাধু-গুরুরা সাঁইজির আখড়াবাড়িতে এই দোলোৎসবে আসেন।  

প্রতি বছরের তুলনায় এবার ভক্ত দর্শনার্থী কম। দুই উৎসবের মধ্যে দোলোৎসবে লোক সমাগম বেশি হলেও এবারে অনেকটা কম। ফকির লালন শাহ তার জীবদ্দশায় এই দোল পূর্ণিমাতে বাউল, সাধু ও ভক্তদের নিয়ে দোলোৎসব উপলক্ষে করতেন সাধুসঙ্গ। সেই রীতিনীতি অনুযায়ী এখনো তার ভক্তরা এই উৎসব পালন করে আসছেন।  

তবে দর্শনার্থী নিয়ে তেমন কোনো মাথা বেথা নেই সাধুদের মনে। তাদের মূল কাজ হলো সাধুসঙ্গ। যথারীতি সাধুরা তাদের কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত। সাধুরা তাদের গুরুদের ভক্তি করছেন। নিচ্ছেন নানান গুরুর দিক্ষা। এ গুরু ভক্তির মধ্য দিয়ে সাধুদের মূল কার্যক্রম। গুরু-শিষ্যের ভাবের আদান-প্রদান, সাধুসঙ্গ আর ফকির লালন সাঁইজির অমর বাণী নিয়ে আলোচনা করছেন সাধুরা।

লালন আখড়াবাড়িতে সাধুসঙ্গরা।  ছবি: বাংলানিউজদৌলতপুর থেকে আসা বাউল সাধক নহের শাহ জানান, সাঁইজির দর্শনে হানাহানির বিশ্বে জাতি-ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে একই শ্রোতধারায় আনা। তার অহিংসার বাণী ও জাতহীন দর্শনের বাস্তবায়ন করতে পারলেই, শান্তি আসবে সর্বময়।

তিনি বলেন, সাঁইজির ধামে এলে আমাদের বাউলদের মনে এক ধরনের শান্তি বিরাজ করে। সাঁইজির কথা, দর্শন নিজে জানার চেষ্টা, নবীন সাধুদের জানানোর জন্যই আমাদের চেষ্টা। সাঁইজি
তার জীবদ্দশায় সাধুদের নিয়ে সাধুসঙ্গ করতেন। তারই দেখানো পথে আমরা চলার চেষ্টা করছি। শুরু-শিষ্যের ভক্তির দৃশ্য যেন মনোরম দৃশ্য।

লালন একাডেমির সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক (খাদেম) মোহাম্মদ আলী জানান, সাঁইজির স্মরণোৎসব উপলক্ষে তার সাধন-ভজনের তীর্থস্থান ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি প্রাঙ্গণ পরিণত হয়েছে উৎসবের পল্লিতে। লালনভক্ত, বাউল অনুসারী ও সুধীজনসহ অসংখ্য মানুষের এখানে আগমন ঘটেছে। এখানে আসতে সাধুদের কোনো দাওয়াতের প্রয়োজন হয় না। তারা আপনা আপনি মনের টানে এখানে ছুটে আসেন।

রোববার (০৮ মার্চ) সন্ধ্যায় সাধুদের গুরু-শিষ্যের ভাব আদান-প্রদান এবং রাখাল সেবার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সাধুদের মূল কার্যক্রম। সোমবার (০৯ মার্চ) সকালে বাল্যসেবা এবং দুপুরে পূন্য সেবার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের সাধুদের মূল কার্যক্রম। তবে মেলা চলবে ১০ মার্চ (মঙ্গলবার) পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।