বিকেলে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন ও টেরাকোটা ম্যুরাল উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীর ওপর এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন উপ-হাইকমিশন প্রধান তৌফিক হাসান।
সভায় শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন ব্যতিক্রমী একজন বাঙালি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন বাঙালির ভাষা, ভূমি থেকে শুরু করে সব কিছু কেড়ে নেওয়ার কথা বলে তখন বঙ্গবন্ধুই বাধা হয়ে দাঁড়ান। বাঙালিকে দুর্দান্ত সাহসিকতার সঙ্গে জাগিয়ে তোলার যাদুকরী ক্ষমতা ছিল বঙ্গবন্ধুর। বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠস্বর শুনলেই শিহরণ জেগে উঠত।
মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধু অন্য দেশের নেতা হলেও তাকে আমাদের নেতা মনে হয়। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ আমরা এখনো গ্রহণ করি। ১৯৭২ সালে কলকাতার গড়ের মাঠে বঙ্গবন্ধু যখন দশ লাখ জনতার সামনে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেই অনুষ্ঠানে কলকাতায় বঙ্গবন্ধু প্রথমে হিন্দিতে শুরু করেন কিন্তু পরে ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শে বাংলায় বক্তৃতা করেন। মুজিবুর রহমান একটি নাম নয়, একটি ইতিহাস। ভৌগলিক দিক থেকে আলাদা হলেও আত্মিক দিক থেকে ভারত ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা।
বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যে দেশের মাতৃভাষা থেকে স্বাধীনতা সবকিছুই আন্দোলন করে অর্জন করতে হয়েছে। এর একমাত্র নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এরপর পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিল্পী অঞ্জন দত্ত চমৎকার সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। এছাড়া, শিশু-কিশোররা এবং কলকাতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের সঞ্চালকের দায়িত্বে ছিলেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।
এর আগে দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী সকালে উপ-হাইকমিশন প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান। এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রেরিত বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। তারপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন এ মিশন মসজিদের ইমাম।
এরপর বঙ্গবন্ধুর ছাত্র জীবনের স্মৃতি-বিজড়িত ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মৌলানা আজাদ কলেজ)-এর বেকার গভর্নমেন্ট হোস্টেলে (কক্ষ নং-২৪) তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কলকাতার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারী, কলকাতায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী এবং স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২০
ভিএস/এইচএডি/