শুক্রবার (২০ মার্চ) জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে উপযুক্ত হাসপাতাল হচ্ছে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এই হাসপাতালে যেন করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ ল্যাব স্থাপন করা হয় সেজন্য আমি আবেদন জানিয়েছি।
দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক জনসংখ্যা, বিদেশ ফেরত এবং করোনা আক্রান্তের চিত্র তুলে ধরে এই আবেদন করেন এসএম অজিয়র রহমান।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সার্বিক সতর্কতা ও ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বরিশালে। সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতন করার কাজটি স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে করে যাচ্ছে।
তবে সরকারি হিসেবে যে পরিমাণ প্রবাসী বরিশাল বিভাগে এসেছেন তার থেকে অনেক কম প্রবাসীকে এখন হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। যে কারণে বিভাগের ৬ জেলার মানুষের মাঝে এ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। তবে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রকট হওয়ার ক্ষেত্রে দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবা শুরু হওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সে লক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগ উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হাসপাতালগুলোতে আলাদাভাবে করোনা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।
বরিশাল বিভাগে শুক্রবার (২০ মার্চ) সকাল পর্যন্ত ৭৬৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এছাড়া বরগুনা, পিরোজপুর ও বরিশাল জেলায় ৩ জন হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন।
যদিও এখন পর্যন্ত কোন রোগীকে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে সনাক্ত করা যায়নি, তবে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রকট হলে এই বিভাগেও আঘাত হানার শঙ্কা রয়েছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। আর স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে কারও শরীরে করোনা ভাইরাস রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার কোন ব্যবস্থা নেই বরিশালে।
এদিকে জানা গেছে, ভাইরাস প্রাদুর্ভাব প্রকট হওয়ার ক্ষেত্রে এর সনাক্তকরণের জন্য দেশের ৭টি বিভাগে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যার ফলে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনে বরিশাল বিভাগ বাদ পড়ার একটি শঙ্কাও করছেন অনেকে। এতে করে উদ্বেগের মধ্যে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসন। কারণ বরিশাল বিভাগে বর্তমানে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পায়রা বন্দরসহ বিভিন্ন বিনোদন ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্র হওয়ায় বিমান, লঞ্চ ও সড়কপথে রাজধানীসহ দেশ-বিদেশের লোকজন যাতায়াত করছে।
বরিশাল জেলা সদর সবথেকে বেশি জনবহুল ও লোকসমাগম সম্পন্ন এলাকা। বিভাগের বাকী ৫ জেলা ও মাদারীপুর, শরিয়তপুর, ফরিদপুরসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলার লোকজনও বরিশাল জেলা সদরে আসেন বিভিন্ন কাজে। তার মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতেই আসেন বেশি লোক। সেক্ষেত্রে এ হাসপাতালকে ঘিরে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের দাবি বাসিন্দাদের।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২০
এমএস/ইইউডি/জেআইএম