বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ইতোমধ্যে এ ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে দেশজুড়ে নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এরই অংশ হিসেবে ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ এবং ‘সামাজিক দূরত্ব’ নিশ্চিত করতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণার পর রাজধানীজুড়ে তৎপরতা বেড়েছে সেনাবাহিনীর সদস্যদের।
বৃহস্পতিবার (০২ মার্চ) রাজধানীর প্রায় প্রতিটি প্রধান সড়ক পেরিয়ে, পাড়া-মহল্লার গলিতেও সেনা সদস্যদের বাড়তি তৎপরতা লক্ষ করা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেনা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের ঘোষণাতেই সড়কে জনসাধারণের চলাচল অনেকটা সীমিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যেও বিভিন্ন প্রয়োজনে যারাই বাইরে বের হচ্ছেন তাদের প্রায় সবাইকে সেনাবাহিনীসহ অন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে সড়কে উল্লেখযোগ্যভাবে যান চলাচল বেড়ে গেলেও বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা আবার কমে এসেছে। যেসব ব্যক্তিগত যানবাহনগুলো বের হয়েছে, তাদের প্রায় সবকটিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তল্লাশিচৌকির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। বের হওয়ার উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে যানবাহনগুলো ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, অন্যথায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাড়া-মহল্লায় প্রয়োজনীয় দোকানের বাইরে যেসব দোকান-পাট খোলা হয়েছে, সেসব দোকানে সেনা সদস্যরা গিয়ে বন্ধ করে দিতে দেখা গেছে। সেনাবাহিনীকে কঠোর হতে হয়, এমন কোনো কর্মকাণ্ড না করতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিন রাজধানীর মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ও আশেপাশের এলাকায় মেজর বেলালের নেতৃত্বে দায়িত্ব পালন করছিলেন সেনাবাহিনীর একটি টিম। দায়িত্বরত অবস্থায় তাদের হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে বিভিন্ন সচেতনতামূলক বার্তা প্রদান করতে দেখা গেছে। এছাড়া, মানুষকে বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের না হতে বার বার আহ্বান জানানো হয়।
মেজর বেলাল জানান, সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে গত ২ দিনের তুলনায় সড়কে মানুষের উপস্থিতি কমেছে। সাধারণত কারণ ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না।
করোনা সংকটে মানুষের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে সরকারি ছুটির প্রথম দিকে রাস্তায় আতঙ্কিত মানুষজনের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সড়কে মানুষের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে থাকে। সংশ্লিষ্টদের মতে, এ যেন আতঙ্ক কাটিয়ে জনসাধারণের বাইরে বের হওয়া, যার ফলে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) থেকে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থানে যাবে এমন খবরে সাধারণত বিনা প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া জনসাধারণের উপস্থিতি কমেছে। সরকার নির্দেশিত বিভিন্ন বিধি-বিধান অমান্য করে বাইরে বের হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া, রাজধানীর ভাষানটেক, লালবাগ, বাড্ডা ও ভাটারা ও সবুজবাগ এলাকা থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পৃথক টিম তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
এদিকে, স্বাভাবিক নিয়মেই সড়কে পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের দায়িত্বপালন করতে দেখা গেছে। তারাও বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট স্থাপন করে যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২০
পিএম/এইচএডি/