বুধবার (০৮ এপ্রিল) দিনগত রাত ২টার দিকে সদর ইউনিয়নের পুরাণ সিরাজপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) ভোররাতে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত শিক্ষকের বুকে, পেটে ও পায়ে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হাফিজ নূরুল আমীন ওরফে লাইস মিয়া সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসী গ্রামের মৃত সজ্জাদ আলীর ছেলে। তিনি বিশ্বনাথ দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার আলীম পরীক্ষার্থী ছিলেন।
বাড়ির লোকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, রাতে হঠাৎ তার চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। বেরিয়ে গিয়ে শয়নকক্ষে রক্তাক্ত অবস্থায় নূরুল আমীনকে দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম মুসা বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বুধবার রাত ২টার দিকে নিজ শয়নকক্ষে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ওই গৃহশিক্ষককে গুরুতর আহত করা হয় হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে ওই বাড়ির মালিক ও তার ছেলেকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লজিং ছাড়া নিয়ে ওই গৃহশিক্ষককে খুন করা হতে পারে ধারণা করছেন তিনি।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রায় চার বছর ধরে বিশ্বনাথ উপজেলার পুরাণ সিরাজপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার বাড়িতে গৃহশিক্ষক হিসেবে ছিলেন হাফিজ নূরুল আমীন। কিছুদিন ধরে ওই বাড়িতে না থাকা এবং পরিবর্তনের জন্য তার শিক্ষক ও সহপাঠীদের সহায়তা চেয়েছিলেন। শবে বরাত শেষে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যাবার কথা ছিল তার। কিন্তু তার আগেই খুন হন তিনি।
আটক সেলিম মিয়ার মা আমীরুন নেছা বলেন, ছেলেটি ভালো ছিল। ক’দিন ধরে চলে যেতে চাইছিল। আমরা তাকে থাকার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু বুধবার রাতে হঠাৎ শুনি কে বা কারা তাকে ছুরিকাঘাত করেছে।
নিহত সেলিমের সহোদর মঞ্জুরুল আমীন বলেন, তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ধরণ দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে। খুনিদের গ্রেফতার ও ফাঁসি দাবি করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২০
এনইউ/আরবি/