ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলা নববর্ষে এনেছে নতুন মাত্রা’

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২০
‘মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলা নববর্ষে এনেছে নতুন মাত্রা’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন।

ঢাকা: ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা বাংলা নববর্ষে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। একইসঙ্গে এই আয়োজন বাংলাকে তুলে ধরেছে বিশ্ব দরবারে। তবে নিজেদের মঙ্গলের জন্যই এবার এই আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না’।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে এক ডিডিও বার্তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি বর্তমান পরিস্থিতিতে সবার সুস্থতা কামনা করে সবাইকে বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, ‘বাংলা নববর্ষ ১৪২৭ সনের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আজ আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে বাংলা নববর্ষকে পেয়েছি, যখন বিশ্বময় আনন্দ উৎসব আয়োজন করার মতো পরিস্থিত বিরাজ করছে না। বরং আমরা এক অত্যন্ত কঠিন মর্মান্তিক পরিবেশের সামনে দাঁড়িয়ে আজকে আমাদের বছরের এই প্রথম দিনটি উদযাপন করতে হচ্ছে। আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজন করি চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে। ১৯৮৯ সালে আমাদের এই অনুষদের তরুণ, নবীন ছাত্ররা এই আয়োজন শুরু করেছিল, যা আজকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মানবতার সঙ্গে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার নামটার সঙ্গে মানব কল্যাণের নামটা যুক্ত আছে। মানবতার জয়ের কথা এর সঙ্গে যুক্ত আছে। যে কারণে আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রা করতাম, যে পরিস্থিতিগুলো মোকাবিলা করার জন্য আমরা মঙ্গল শোভাযাত্রা করতাম, সেই জিনিসগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল মানুষে মানুষে ভেদাভেদ হানাহানি, কিছু অপশক্তি থেকে মানুষকে উজ্জীবিত করে একটা প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা। যে প্ল্যাটফর্মটা মঙ্গল শোভাযাত্রা। আমরা শ্রেণি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সবাইকে সেখানে আহ্বান করতাম এবং সবাই সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের লাখো জনতার সমাগম ঘটতো এই মঙ্গল শোভাযাত্রায়। যার প্রস্তুতিই ঘটতো দীর্ঘ এক মাস ধরে। ’

মঙ্গল শোভাযাত্রার বাংলা নববর্ষে নতুন মাত্রা এনেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার কারণে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। একইসঙ্গে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই দিনটি এখন উদযাপন করা হয়। সেদিক থেকে বলতে গেলে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত এবং মর্মাহত যে আমরা সেই আয়োজনটি করতে পারছি না। কিন্তু একইসঙ্গে আমরা আশাবাদী, আগামী বছরগুলোতে আমরা এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যেন আরো ভালোভাবে এই উদযাপন করতে পারি, সেই দিকটি ভেবেই আমরা এবার নববর্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা থেকে বিরত আছি। ’

করোনা পরিস্থিতিতে মঙ্গল শোভাযাত্রা না করা প্রসঙ্গে নিসার হোসেন বলেন, ‘আমরা আমাদের এই সময়ে যে রোগের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি, সেই লড়াইয়ের ধরণটাই হচ্ছে এই লড়াইয়ে জিততে গেলে আমাদের ঘরে অবস্থান করতে হবে। আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময় সবাইকে ঘর থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম এবং আমরা জয়ী হয়েছিলাম। এই করোনার বিরুদ্ধে আমাদের যে যুদ্ধ তার জন্য আমাদের ঘরে অবস্থান করতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ’

এ সময় তিনি সবাইকে নিজ ঘরে বসে নিজস্ব আয়োজনে বাংলা ও বাঙালির সংস্কৃতির প্রতি মনোযোগ ও পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২০
এইচএমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।