কিন্তু এবারের বাড়ি ফেরায় যে তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে তা কি তিনি কখনো ভাবতে পেরেছেন। গত (১৪ এপ্রিল) এলাকায় ঝগড়ার প্রতিবাদ করায় নিমর্মভাবে খুন হন রাজীব।
মৃত রাজীবের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো বাড়ি জুড়ে সুনসান নীরবতা। ছেলে হারানোর শোকে তার মা-বাবা মানুষজন দেখলেই বিলাপ করে বলতে থাকেন আমার ছেলেরে ফিরিয়ে এনে দাও। ছেলের এমন করুণ মৃত্যু তারা কিছুতেই মানতে পারছেন।
কথা হয় রাজীবে চাচা আব্দুল আওয়ালের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, রাজীব পরিবারের হাল ধরতে বাড়ি ছেড়ে কয়েক বছর আগে রাজধানী ঢাকায় চলে যান। সেখানে টাইলসের কাজ করতেন। সে সঙ্গে অন্য বেকার যুবকদেরও কাজের ব্যবস্থা করে দিতেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে মৃত রাজীবের মা পিয়ারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, এখন তো আর ছেলেরে পাবো না। আমার বুকের ধনরে যারা হত্যা করছে তাদের বিচার হলেই আমার আত্মা শান্তি পাবে। সরকারের কাছে আমার আবেদন আমি এর সঠিক বিচার পাই।
জানা যায়, গত (১৪ এপ্রিল) ঝালমুড়ি খাওয়াকে কেন্দ্র করে ঝগড়ায় লিপ্ত হন দুই যুবক। সামনে উপস্থিত রাজীব মধ্যস্থতা করে দুইজনের ঝগড়া থামিয়ে দেয়। পরে তার বাড়ির পাশে করিম মেম্বারের নির্দেশে তার লোকজন রাজীবকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কেন ঝগড়া থামিয়ে দিল সেজন্য শাসাতে থাকে। এক পর্যায়ে করিমের অনুসারীদের সঙ্গে রাজীব ও তার ভাইয়ের তর্ক বাধে।
এতে উত্তেজিত হয়ে করিমের লোকজন রাজীবসহ তার দুই ভাই রুবেল ও কোরবান আলীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তখন আশেপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কতর্ব্যরত ডাক্তার তাকে ঢাকায় পাঠায়। ঢাকায় অবস্থিত বেসরকারি ক্লিনিক আল-আশরাফ জেনারেল হাসপাতালে গত (১৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজীব মারা যান। পরে তার মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় তার বাবা ইছুব আলী বাদী হয়ে গত ১৮ এপ্রিল নাসিরনগর থানায় ২৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০২০
এনটি