ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

করোনায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুর দাবি,পুলিশের নাকচ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩২ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২০
করোনায় দুই ভাইয়ের মৃত্যুর দাবি,পুলিশের নাকচ মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প/ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবস্থিত জেনেভা ক্যাম্প খুবই  ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য অলিখিত লকডাউন চললেও ছোট ছোট রুমেই একত্রে ৭ থেকে ৮ জনকে কোনোমতে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। এই কারণে ক্যাম্পে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছে বাসিন্দারা।

শনিবার (২ মে) রাতে এই বিষয়ে কথা হয় জেনেভা ক্যাম্পের ‘নন লোকাল রিলিফ কমিউনিটি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এসএম সীমার সঙ্গে।

তিনি আরো জানান, আমাদের ক্যাম্পে আনুমানিক ৭ হাজার পরিবার বাস করে।

এই ক্যাম্পের একেকটি রুম খুবই ছোট। কোনো কোনো রুম ১৮ থেকে ১০ফিট আবার ৫  থেকে ১০ ফিট। কোনো কোনো পরিবারের সদস্য সংখ্যা দেখা গেছে পাঁচ থেকে আট জন করে আছে। তাই  ক্যাম্পে করোনা আক্রান্ত হওয়ার কারণে লকডাউন ঘোষণা হলেও একত্রে এত সদস্যদের একটি ছোট রুমে কোনোমতে রাখা যাচ্ছে না বা তারা থাকছে না। এসব কারণেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে।

তিনি দাবি করেন, জেনেভা ক্যাম্পে 'ডি' ব্লকে একই পরিবারের দুই ভাই করোনা পজিটিভ নিয়ে মারা গেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তারা দুই ভাই করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রথম সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে গিয়েছিল। সেখান থেকে এক পর্যায়ে তারা পালিয়ে আসে জেনেভা ক্যাম্পে। পরে সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়। আনুমানিক ১৫ থেকে ১৬ দিনের আগের ঘটনা। দু'জনই যুবক ছিল। মৃত্যুর পরে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং কয়েকদিন পরে জানানো হয় যে তারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিল।  

জেনেভা ক্যাম্পে মোট পাঁচটি ইন-আউট গেট আছে। এদের মধ্যে দুটি গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর তিনটি গেট সব সময় খোলা থাকে। যেখান দিয়ে ক্যাম্পের বসবাসকারীরা আসা-যাওয়া করে।  

ক্যাম্পের বাসিন্দা সীমা আরো জানান, ক্যাম্পের ভেতরে আমাদের সবকিছু দৈনন্দিন বাজার বসে। এটা ক্যাম্পবাসীরা করে থাকে। তারাই বাইরে থেকে বাজার সংগ্রহ করে ভেতরে ক্ষুদ্র ব্যবসা করে থাকে। তা না হলে ক্যাম্পের বাসিন্দাদের না খেয়ে মরতে হবে।

তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে কিছু সহযোগিতা আমরা বাইরে থেকে পেয়েছি। এনজিও, স্থানীয় কমিশনারসহ অনেকেই আমাদের সহযোগিতা করেছে। এর মধ্যে আছে চাল ও শুধু আলু। আমরা এই পর্যন্ত দুই থেকে তিনবার সহযোগিতা পেয়েছি।  আমাদের ক্যাম্পে 'সি ব্লক' এলাকার একটি বাসায় একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। সেই গলিটা লকডাউন করা হয়েছে। দুই পাশে বাঁশ দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে তবে সেই লোকটি এখন সুস্থ।  

এসব বিষয়ে কথা হয় মোহাম্মদপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল আলীমের সঙ্গে। তিনি জানান, এপ্রিল ও মার্চ মাসে মিলে জেনেভা ক্যাম্পে বেশ কয়েকজন মারা গেছে। এদের মধ্যে দুই ভাইও আছে। তবে তাদের মৃত্যু করোনা পজিটিভে এরকম প্রমাণ আমরা পাইনি। অনেকেই ব্রেন স্ট্রোক ও নানারকম অসুস্থতা নিয়ে মারা গেছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে ক্যাম্পের দুই বাসিন্দা করোনায় পজেটিভ এর প্রমাণ পেয়েছি। তাদের রুমের মধ্যে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল। তারা এখন ভালো আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩২ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০২০
এজেডএস/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।