জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ মনে করছে, হবিগঞ্জে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের অন্যতম কারণ করোনার ‘ক্লাস্টার’ এলাকা নারায়নগঞ্জ থেকে ফেরত লোকজন। এছাড়া ঢাকাসহ অন্যান্য স্থান থেকে আগতদের মাধ্যমেও বেড়েছে সংক্রমন।
হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১১ এপ্রিল নারায়নগঞ্জ থেকে আসা এক গাড়ি চালকের মাধ্যমে করোনার থাবা শুরু হয় হবিগঞ্জে। এরপর প্রায় প্রতিদিনই বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। যাদের অধিকাংশই নারায়নগঞ্জ ফেরত। যে কারণে তারা মনে করছেন নারায়নগঞ্জ থেকে ফেরত লোকজনের মাধ্যমেই হবিগঞ্জে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে। ২ মে পর্যন্ত এখানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ জন। যা সিলেট বিভাগে অন্য তিন জেলার তুলনায় সর্বোচ্চ। যে কারণে এই এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, রোববার (৩ মে) পর্যন্ত হবিগঞ্জ থেকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ এবং ঢাকার ল্যাবে নমুনা পাঠানো হয়েছে ২ হাজার ২১৪ জনের। এদের মধ্যে থেকে রিপোর্ট এসেছে ১ হাজার ৫২৯টি। পর্যায়ক্রমে বাকি রিপোর্টগুলো আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে ৫ শতাধিক লোকজন জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রবেশ করেন। যাদের অধিকাংশই গার্মেন্টসকর্মী। প্রশাসনের মাধ্যমে কিছু সংখ্যক শ্রমিকের হোম কোয়ারেন্টিন সম্পন্ন হয়। তবে আগতদের শতভাগকে হোম কোয়ারেন্টিনে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে গত ২৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে ধান কাটা শ্রমিক পরিচয়ে অন্তত ৪০ জন লোক পটুয়াখালী থেকে ট্রাকে করে এসে হবিগঞ্জে প্রবেশের চেষ্টা করেন। জেলাটি লকডাউন থাকায় তাদের ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। এর আগেও ৪টি বাসে আসা লোকজনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পটুয়াখালী অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এখান থেকে যদি কেউ গিয়ে থাকেন তারা লুকিয়ে গেছেন। বিষয়টি আমাদের জানা নেই। ওই লোকদের পুনরায় সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
ট্রাকে থাকা লোকজন হবিগঞ্জে প্রবেশ করতে পারেননি, আবার যেতে পারবেন না পটুয়াখালীও। এখন প্রশ্ন তারা যাবে কোথায়? অনেকেই মনে করছেন রাতের আধারে তারা হবিগঞ্জ প্রবেশ করেছেন এবং পরবর্তীতে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে যার যার বাড়িতে গেছেন। ওই লোকগুলোকে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা উচিত ছিল বলেও মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৭ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২০
ওএফবি