ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিধবা-বয়স্ক-প্রতিবন্ধী ভাতা দিতে ৩০ টাকা আদায়ের অভিযোগ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৯ ঘণ্টা, মে ৯, ২০২০
বিধবা-বয়স্ক-প্রতিবন্ধী ভাতা দিতে ৩০ টাকা আদায়ের অভিযোগ 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী  কর্মসূচির আওতায় সারাদেশের বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সুবিধা ভাতা দিয়ে আসছে সরকার। আর এই সুবিধাভোগীদের ভাতার টাকা সুষ্ঠুভাবে বিতরণের জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থাও করে দেয় সরকার।

কিন্তু শনিবার (০৯ মে) সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের  শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাকা বাজার বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সুবিধা ভাতা দিতে অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া মৃত ২ জনের নামে বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সুবিধা ভাতার টাকা ৩ নম্বর  ওয়ার্ড সদস্য মো. রমজান আলী উত্তোলন করে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এই ইউনিয়নে ৪৫০ জন  বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সুবিধা ভাতাভোগী রয়েছে।

জানা গেছে, পাকা ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের পরিচালক মো. সুজন আলী, ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য  মো. রমজান আলী ও গ্রাম্য পুলিশ মো. শরিফুল ইসলামের যোগসাগশে বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।

সুবিধাভোগী ভক্তভুগীরা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের টাকা দেওয়ার আগের দিন শরিফুল চৌকিদার মাইকিং করে বলে  বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সুবিধা ভাতার টাকা দেওয়া হবে আপনারা নিতে আসবেন এবং সঙ্গে করে ৩০ টাকা করে নিয়ে আসবেন। এই ৩০ টাকা খরচ হিসেবে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

এদিকে গ্রাম্য পুলিশ মো. শরিফুল ইসলাম জানান,  আমাকে ডিজিটাল সেন্টারের পরিচালক মো. সুজন  আলী মাইকিং করার নির্দেশ দিয়ে ৩০ টাকা আদায়ের কথা বলেন, তাই আমি ৩০ টাকা করে আদায় করেছি।  

এছাড়া তিনি আরো বলেন, অন্য আরো ৩টি ওয়ার্ডেও একই মাইকিং করা হয়েছে। আমি যাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছি, তাদের টাকা ফেরত দিয়ে দিচ্ছি।

এ বিষয়ে পাকা ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টারের পরিচালক মো. সুজন আলীর কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, ৩০  টাকা করে নেওয়া হচ্ছে এটা আমার জানা নাই।

তবে শুনেছি চৌকিদার এ টাকা আদায় করছে। আমি তাকে টাকাগুলো ফেরত দিতে বলেছি। সে টাকাগুলো ফেরত দিয়েছে।

এছাড়া ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রমজান আলী জানান, সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা করে  আদায় করা হচ্ছে এ বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি বিষয়টি জেনে সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা তাদের ফেরত দিতে বলছি। মৃত ব্যক্তিদের নামে বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সুবিধা ভাতা কার্ডের টাকা উত্তোলনের বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।

পাকা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. দুরুল হোদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কাঞ্চন কুমার দাস জানান, এ বিষয়টি আমার  জানা ছিলো না, এখন জানলাম। তদন্ত করে এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত বছর ৪ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের  সভাপতি মো. ইসমাইল হোসেন মাস্টার পাকা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ পাকাবাজার বিধবা-বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সুবিধাভাতা বিতরণ কেন্দ্রের জন্য উপজেলা সমাজসেবা অফিসার বরাবর  আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার এই সুবিধাভোগীদের ভাতার টাকা বিতরণ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২২১৫ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।