রোববার (১৭ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাস ভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সভার সমন্বয় করেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কৃষক বোরোতে এবার বাম্পার ফলন ও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। এ বাজার দর ধরে রাখতে সরকারি সংগ্রহের গতি বাড়াতে হবে। এছাড়া নির্দেশ মোতাবেক খাদ্যশস্যের মান যাচাই করে সংগ্রহ করতে হবে। ধান-চাল কেনায় কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত পড়ে না থাকে। এজন্য আউশ মৌসুমে কৃষক যেন আউশ ধানের চাষ করেন। যে সমস্ত কৃষক আউসের প্রণোদনা নিয়েছেন, তারা বীজ তলা তৈরি করেছে কি না তা যাচাই করে দেখতে স্থানীয় কৃষি প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
কৃষকদের আউশ আবাদে আরও আন্তরিক হবার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কৃষকদের আউশ ধানের আবাদে আরও আন্তরিক হতে হবে। অনেক কৃষকই আউশ মৌসুমে প্রণোদনা নিয়ে থাকে কিন্তু পরে আর আবাদ করে না। যারা প্রণোদনা পাবার পরও আউশ ধানের আবাদ করবে না তাদের প্রণোদনা বাতিলসহ পরবর্তীতে তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কথা তুলে ধরে মন্ত্রী আরও বলেন, এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের তালিকা নিয়ে কিছু অভিযোগ আসায় প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে চিঠি দেওয়া হয়েছিল অতি দ্রুত যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত গরিব ও দুস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে তালিকা পাঠাতে হবে। এজন্য যেকোনো ধরনের হুমকি-ধামকিকে ভয় না করে; স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে থেকে প্রকৃত গরিব ও দুস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। তিনি প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় অতীতে তালিকা তৈরি করার সময়ে যে ট্যাগ অফিসার ছিলেন তাদের সরিয়ে নতুন করে কোনো ট্যাগ অফিসারকে দায়িত্ব দিয়ে হালনাগাদ করে নতুন তালিকা সাত দিনের মধ্যে প্রণয়ন করার নির্দেশ দেন।
ভিডিও কনফারেন্সে রাজশাহী বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার করোনা মোকাবিলা পরিস্থিতি, চলতি বোরো ধান কাটা-মাড়াই, সরকারিভাবে ধান চাল সংগ্রহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মন্ত্রী।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের প্রকিউরমেন্ট যেন কৃষক বান্ধব প্রকিউরমেন্ট হয়। চালের মান নিয়ে কোনো আপস নেই।
ধান-চাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে প্রতিটি উপজেলায় সংগ্রহ কমিটি রয়েছে জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই দেশের অনেক জায়গায় লটারি হয়েছে এবং বাকি জেলা-উপজেলায়ও খুব তাড়াতাড়ি লটারি সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, লটারি করার সময় সংগ্রহ কমিটির প্রতিটি সদস্য যেন উপস্থিত থাকেন। বিশেষ করে সংগ্রহ কমিটিতে যিনি কৃষক প্রতিনিধি রয়েছেন তিনি যেন লটারির সময় উপস্থিত থাকেন। লটারি করার পর আগে থেকেই ওয়েটিং লিস্ট করে রাখারও নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি কোন কৃষক যেন তার স্লিপ মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের কাছে বিক্রি না করেন এজন্য তিনি সাবধান করে দেন।
ভিডিও কনফারেন্সে আরও বক্তব্য রাখেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক, রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, রাজশাহী, নওগাঁ, বগুড়া, জয়পুরহাট, নাটোর, পাবনা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসকরা এবং রাজশাহী বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২০
এসকে/আরআইএস/