ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজধানীতে বাড়ছে মানুষের চলাচল

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০২০
রাজধানীতে বাড়ছে মানুষের চলাচল কর্মস্থলে ছুটছে মানুষ। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সাধারণ ছুটি শেষ হওয়ার পর ধীরে ধীরে নিজের চেনা রূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে মেগাসিটি ঢাকা। কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীতে বাড়ছে মানুষের চলাচল। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে এক রকম ফাঁকা থাকা ঢাকা এখন বেশ ব্যস্ত।

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) ব্যাপক সংক্রমণ রোধে গেল ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। কয়েক দফায় বাড়ানো সেই ছুটি থাকে ৩১ মে পর্যন্ত।

একই সময় বন্ধ থাকে গণপরিবহণ চলাচল। ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচলেও ছিল সীমাবদ্ধতা। সবমিলিয়ে রাজধানীতে নাগরিকদের চলাচল ছিল খুবই সীমিত পরিসরে।

অন্যদিকে লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল রাজধানীতে প্রবেশ এবং রাজধানী থেকে বের হওয়ার পয়েনটগুলো। নাগরিকদের মধ্যে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে বিভিন্ন সময় পুরো দেশে নাগরিকদের চলাচলের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। সীমিত সময়ে বাজার করা, সীমিত সময়ের জন্য দোকানপাট, সুপার শপ খোলা রাখা, সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা; এমন আরও নানান কারণে রাজধানীবাসীর জন্য চলাচলের সুযোগও ছিল সীমিত।

তবে এই সবকিছু কাটিয়ে এখন রাজধানীতে এখন নাগরিকদের বেশ দৌড়ঝাঁপের মধ্যে দিয়েই যেতে হচ্ছে। খুলে গেছে সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো। ফলে সকালে কর্মমুখী আর বিকেল-সন্ধ্যায় ঘরমুখো মানুষদের ছুটে চলা দেখা যায় জাদুর এই শহরজুড়ে। মতিঝিল, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, বনানী, মহাখালী, গুলশান, মিরপুর এবং উত্তরা এলাকার বিভিন্ন সড়কের মোড় এবং প্রধান পয়েন্টগুলোতে তাই দেখা যায় মানুষের ভিড়।

কর্মস্থলে ছুটছে মানুষ।  ছবি: শাকিল আহমেদবড় বড় কিছু শপিংমল এখনো বন্ধ থাকলেও অনেক এলাকাতেই এখন ফুটপাতে পসরা সাজাতে দেখা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের। নাগরিকদের ব্যস্ততা আছে সেসব ঘিরেও। দুই একটি প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিচ্ছেন ফুটপাত থেকেই। ফুটপাতে হেঁটে চলা মানুষের সংখ্যাও যেন বেড়েছে এই দুই একদিনে।

বাদ নেই পাড়া মহল্লার অলিগলিও। সীমিত পরিসর বা শারীরিক দূরত্ব; মানা হোক বা না হোক, এলাকার মুদি দোকান, চায়ের দোকানগুলো ফিরে যাচ্ছে নিজেদের আড্ডাস্থলের রূপে। চায়ের কাপে ঝড় উঠছে করোনা পরিস্থিতি নিয়েই। সন্ধ্যার মাঝেই বাড়ি প্রবেশ করার তাগিদ না থাকায় মধ্যরাত পর্যন্তও অনেক স্থানেই মানুষের জটলা দেখা যায়। আর ঘরের বাইরে থাকার স্বপক্ষে এসব মানুষদের আছে নানান সব কারণ ও প্রয়োজন।

এদিকে গণপরিবহণ চালু হুওয়ায় বেড়েছে ‘মাস কমিউটিং ক্যাপাসিটি’ বা বহু মানুষের চলাচলের সক্ষমতা। পরিবহনের অভাবে এতদিন যারা ঘর থেকে বের হননি তারাও এখন বাইরে বের হচ্ছেন। একই সঙ্গে আন্তঃজেলা বাস, ট্রেন ও লঞ্চ চালু হওয়ায় রাজধানীর বাইরে থেকে আসা মানুষদের চাপও বাড়ছে কয়েক শতাব্দী পুরনো এই শহরের ওপর। সবমিলিয়ে রাজধানীর ভেতরে বিভিন্ন এলাকায় এবং রাজধানীর ভেতরে-বাইরে সব জেলাকে কেন্দ্র করেই রাজধানীতে বাড়ছে সাধারণ মানুষের চলাচল।  

কর্মস্থলে ছুটছে মানুষ।  ছবি: শাকিল আহমেদবুধবার (৩ জুন) সকালে রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর বাস ডিপোর সামনে কথা হয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে।

বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে বলেন, এখন তো অফিস খোলা। বের না হয়ে তো উপায় নাই। অফিসের আগে আবার বিভিন্ন এলাকার যেতে হয়। আবার সেই কর্মব্যস্ত দিনগুলো ফিরে আসছে। কাজ বাড়ছে, তাই ছুটে চলতে হচ্ছে।

এখানকারই ট্রাফিক পুলিশ বক্সে দায়িত্বরত ট্র্যাফিক কনস্টেবল মোহাম্মদ ফারুক বলেন, বেশ কিছুদিন যাবত এখানেই ডিউটি করছি। এতদিন এত বেশি মানুষ ছিল না। এখন এই ১২ নম্বর স্ট্যান্ডের ব্যস্ততা দেখা যায়। আগের থেকে অনেক বেশি মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০২০
এসএইচএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।