ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘পুড়ে গেছে বাড়ির সার্কিট ব্রেকার, টেকনিশিয়ান নিতে হবেই’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২০
‘পুড়ে গেছে বাড়ির সার্কিট ব্রেকার, টেকনিশিয়ান নিতে হবেই’

ঢাকা: ‘বাড়ির সার্কিট ব্রেকার পুড়ে গেছে। বিদ্যুত নেই। রাতে আমাদের কারও ঘুম হয়নি। গরমে ঘরে থাকতেও খুব কষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে আজ থেকে আবার ওয়ারী লকডাউন। এখন দুপুর। ইলেক্ট্রিক টেকনিশিয়ানকে ঢুকতে দিচ্ছে না। তাই গেটে অপেক্ষা করছি। টেকনিশিয়ানকে সঙ্গে নিয়েই যেতে হবে।’

ওয়ারীর চন্দ্রীচরণ বোস স্ট্রিট (হট কেক) গেটে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সুমন।

বাড়ির সার্কিট ব্রেকার সারানোর জন্য এক্সওয়াইজেড কোম্পানিতে ফোন করেন তিনি।

কোম্পানি একজন টেকনিশিয়ান পাঠায়। কিন্তু প্রশাসনের নানা প্রশ্নের বাধায় তাকে ফিরে যেতে হয়। পরে আবার যোগাযোগ করে টেকনিশিয়ান এলে উপযুক্ত কারণ বলে তাকে গেট থেকে ওয়ারীর ভেতরে নিয়ে যান ভুক্তভোগী সুমন।

শনিবার (০৪ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা সুমন গেটে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছেন। তিনি বলছিলেন, আমার বাড়ির সার্কিট ব্রেকার পুড়ে গেছে। সারারাত খুব কষ্টে কাটিয়েছি। এখন একজন টেকনিশিয়ান এসেছে, তাকে ভেতরে আসতে দিলে বিদ্যুতের লাইন সারাতে পারবো। দয়া করে তাকে ভেতরে আসতে দিন।

এরপর দায়িত্বরত পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) তার পুরো বিষয়টি শোনেন। শোনার পর যৌক্তিক মনে হলে গেটে এন্ট্রি খাতায় নাম, প্রতিষ্ঠানের নাম ও মোবাইল নম্বরসহ তথ্য লিখে রেখে ওই ইলেক্ট্রিক টেকনিশিয়ানকে ভেতরে ঢুকতে দেন।

ভুক্তভোগী সুমন বলেন, প্রথমবার টেকনিশিয়ান ভেতরে আসতে না পেরে চলে যায়। পরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে পুনরায় আসতে বলি। গেটে অনেক কথা বলে তাকে নিয়ে যাই।

ভুক্তভোগী সুমনের মতো ওয়ারী এলাকায় অনেক বাসিন্দা আছেন, তাদের জরুরি প্রয়োজনের বিষয়ে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ পেলে তাদের ভেতরে প্রবেশ ও বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে।

ছবি: ডিএইচ বাদল

হটকেক মোড়ের গেটে ১০ জন স্বেচ্ছাসেবক আছেন। তারা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে গেটের নিরাপত্তার বিষয়ে কাজ করছেন। এই গেটে ওয়ারীর ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মান্নাফি নিজে থেকে লকডাউনের সার্বিক বিষয় তদারকি করছেন।

এদিকে ওয়ারীর অনেক বাসিন্দাদের গেটে এসে ভিড় করতে দেখা গেছে। তাদের কেউ, লাজফার্মার ওষুধ পরিরর্তন করতে যেতে চাইছেন, আবার কেউ নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে চান, কেউ আবার মেশিনের পার্টস পরিবর্তনের জন্য যেতে চাইছেন। তবে স্বেচ্ছাসেবকরা ও প্রশাসনের কেউ তাদের এলাকা থেকে বের হতে দিচ্ছেন না।

এ বিষয়ে ওয়ারীর ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মান্নাফি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যেমন, ভেতরে দুটি হাসপাতাল রয়েছে, সেখানে রোগীর স্বজন ও রোগীদের প্রবেশ করতে দিচ্ছি। এছাড়া জরুরি ওষুধ সরবরাহের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে কাউকে ভেতরে প্রবেশ ও ভেতর থেকে বাহির যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

চন্দ্রীচরণ বোস স্ট্রিটের গেটে দায়িত্বরত পুলিশের ওয়ারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জহির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সকাল থেকে কম করে হলেও ২০০ মানুষ ভেতর থেকে বাইরে যেতে চেয়েছেন। অনেকে ঝামেলা করেছেন। কিন্তু উপযুক্ত কারণ ছাড়া আমরা কাউকে বের হতে দিইনি। স্থানীয়দের অনেকে এসে ঝামেলা করেন।

ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে ওষুধ পরিবহনে ব্যবহৃত গাড়ি।  ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. এমদাদুল হক লকডাউনে থাকা ওয়ারী পরিদর্শন করেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনে ওয়ারী এলাকায় এখন পর্যন্ত কোনো ত্রুটি আমার চোখে পড়েনি। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা এবং স্বেচ্ছাসেবকরা জনমানুষের কাছে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছেন। আজ লকডাউনের প্রথমদিন। তাই ছোটখাটো কিছু ত্রুটি থাকতে পারে। তবে সেগুলো আমরা খুঁজে বের করে পরে যেন এসব ভুল আর না হয় সে চেষ্টা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২০
এসজেএ/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।