ঢাকা, শুক্রবার, ২১ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৬ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

সকালে ঢামেকে দালাল নির্মূলে অভিযান, সন্ধ্যায় ওয়ার্ড থেকে মোবাইল চুরি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৫
সকালে ঢামেকে দালাল নির্মূলে অভিযান, সন্ধ্যায় ওয়ার্ড থেকে মোবাইল চুরি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ফাইল ছবি

ঢাকা: সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দালাল নির্মূলে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা ও হয়রানির ঘটনায় নারী-পুরুষসহ ৩৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করে। সেই অভিযানে সাজা দেওয়া হয় ১৯ জন নারী ও ১৪ জন পুরুষকে।

অভিযান শেষ হতে না হতেই হাসপাতালের নতুন ভবন থেকে বাবাকে সেবা দিতে সঙ্গে থাকা মেয়ে রোকসানা রুমি অর্পির মোবাইল চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটে। তার অভিযোগ, বাবাকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে যাওয়া চালকের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ না করার কারণে সে মোবাইলটা চুরি করে নিয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬০১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগী শহীদুল্লাহর মেয়ে অর্পির মোবাইল চুরি যাওয়ার ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে সাংবাদিকদের অর্পি অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার রাতে স্টোকজনিত সমস্যার কারণে তার বাবা শহীদুল্লাহকে নোয়াখালী থেকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। জরুরি বিভাগে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে একটি হুইল চেয়ার তাদের কাছে এগিয়ে যায়। তখন রাত আনুমানিক দেড়টা বাজে। সেই হুইল চেয়ারের চালক অল্প বয়সী একটি ছেলে আমার বাবাকে নিয়ে চিকিৎসকের নির্দেশে বিভিন্ন ওয়ার্ডে দৌড়াদৌড়ি করে। হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা পরে বাবাকে ভর্তি দেয় নতুন ভবনের ৬০১ নম্বর ওয়ার্ডে। ভর্তির আগে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে দৌড়াদৌড়ির মাঝে হুইল চেয়ারের ওই চালকটি আমাদের কাছে ১ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করে। এ টাকা তাকে না দিলে বাবাকে ভর্তি করাবে না। তখন হুইল চেয়ারের চালককে আমি বলি, যেভাবেই হোক আমার বাবাকে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। আপনার কষ্টের পারিশ্রমিক আমি দেব। এক পর্যায়ে আমার বাবা ভর্তি হলে সেই হুইল চেয়ারের চালককে আমি ৪০০ টাকা দেই। সে ৪০০ টাকা পেয়ে আমার সঙ্গে অনেক দুর্ব্যবহার করে। বলে আপনি কথা দিয়েছেন ১ হাজার ৫০০ টাকা দেবেন, ৪০০ টাকা কেন দিলেন। এক পর্যায়ে তাকে অনেক বোঝানো হয় যে আমরা কাছে এত টাকা নেই। পরে হুইল চেয়ারের চালক আমাকে অপমান-অপদস্ত করে স্থান ত্যাগ করে। এক পর্যায়ে পরের দিন সেই হুইল চেয়ারের চালক নতুন ভবনের ওয়ার্ডে গিয়ে আমাকে ফলো করতে থাকে। আজও সন্ধ্যার দিকে সে আমাদের ওয়ার্ডে যেই বিছানায় বাবা শুয়ে আছেন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে। তখনো মোবাইলটি আমার হাতে ছিল। হঠাৎ মোবাইলটি বিছানায় রেখে বাবার স্যালাইনের লাইনটি ঠিক করার সময় দেখতে পাই মোবাইলটি পাশে নেই। এখানে দাঁড়িয়ে থাকা সেই হুইল চেয়ারের চালকও নেই। আমার ধারণা, তাকে ১ হাজার ৫০০ টাকা না দেওয়াই সেই প্রতিশোধ হিসেবে আমার মোবাইলটি চুরি করে নিয়ে গেছে।

ঘটনাটি আমি হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে অবগত করেছি। তারা আমাকে বলেছে, শাহবাগ থানায় গিয়ে জিডি করতে। বর্তমানে আমি শাহবাগ থানায় আছি।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প (এসআই) মাসুদ আলম জানান, নতুন ভবনের একটি ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা এক রোগীর স্বজনের মোবাইল চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ চুরির বিষয়ে লোকজন আমাদের কাছে এসেছিল। দ্রুত তাদের শাহবাগ থানায় পাঠিয়ে দিয়েছি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কারণ নম্বরটি খোলা আছে, পুলিশ ট্যাগ করলে দ্রুত ধরতে পারবে।

আরও পড়ুন...
ঢামেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান, অর্ধশত দালাল আটক
দালালরা কাজটা পেশা হিসেবে নিয়েছেন: ঢামেক পরিচালক


বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৫
এজেএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।