শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে ‘দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটি চট্টগ্রাম’ আয়োজিত বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক সম্মাননা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উচিত দেশে যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযানের জন্য অভিনন্দন এবং সাধুবাদ জানানো।
তিনি বলেন, (বিএনপি চেয়ারপারসন) খালেদা জিয়া নিজে অবৈধভাবে অর্জিত কালো টাকা সাদা করেছিলেন। (আরাফাত রহমান) কোকোর দুর্নীতি ধরা পড়েছে সিঙ্গাপুরে, তারেক রহমানের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে। দুর্নীতির দায়ে তারেক রহমানের দশ বছর সাজা হয়েছে। এতিমখানার টাকা মেরে খেয়েছে। এ জন্য দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলখানায় আছেন খালেদা জিয়া।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানি রূপ দেওয়া হয়েছিল। হাওয়া ভবন তৈরি করে সমস্ত ব্যবসা থেকে ১০ শতাংশ কমিশন নেওয়া এবং দেশের সমস্ত ব্যবসার সঙ্গে হাওয়া ভবনের মাধ্যমে তারেক জিয়া ও বিএনপির বড় বড় মন্ত্রীদের সংশ্লিষ্টতা আমরা দেখেছি। বিএনপির অপকর্ম ও দুর্নীতির কারণেই তাদের শাসন আমলের পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছরই বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করে দেশ পরিচালনা করছেন। সে কারণে দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতি বা অনিয়ম যেগুলো হচ্ছে, সেটির বিরুদ্ধে বর্তমানে ঢাকা শহরে অভিযান চলছে, চট্টগ্রামেও শুরু হয়েছে। দুনীতির বিরুদ্ধে যে সরকার কঠোর অবস্থানে আছে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ এ অভিযান। এ জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উচিত ছিল সরকারকে অভিনন্দন জানানো।
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার হাতে পায়ের ব্যথা, এটি বহু পুরনো শারীরিক সমস্যা। এই শারীরিক সমস্যা নিয়েই তিনি দেশের দু’বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দু’বার বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বিএনপির মতো দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সুতরাং এ সমস্যাকে রাজনীতিতে নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বিএনপি।
সরকার খালেদা জিয়াকে দেশের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি যেন সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান, সে ব্যাপারে সরকার যত্নবান আছে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যাল হাসপাতালে তাকে রাখা হয়েছে।
সিনিয়র সিটিজেনদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা রাষ্ট্রকে উন্নত করার পাশাপাশি একটি সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এস্টেট ও মানবিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই। শুধু বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে মূলত দেশ গঠন করা সম্ভব, মানবিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গঠন করা ভিন্নকাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছেন। দেশের দুঃস্থ সিনিয়র সিটিজেনদের কথা মাথায় রেখে তিনি বয়স্কভাতা চালু করেছেন। প্রতিবছর বয়স্কভাতার পরিমাণ ও পরিধি বাড়ানো হচ্ছে। ইউরোপের সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার এস্টেটগুলোতে সর্বক্ষেত্রে পেনশন চালু আছে।
দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটি-চট্টগ্রামের সভাপতি দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, বিশেষ অতিথি ছিলেন দি সিনিয়র সিটিজেন্স সোসাইটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবু বকর ছিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক আজহার মিয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন সোসাইটির চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক লায়ন এম এ শামসুল হক।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এ এ এম জিয়া হোসাইন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান শিক্ষাবিদ ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, কবি ও লেখক সাংবাদিক অরুণ দাশ গুপ্ত, উদীচী চট্টগ্রামের সভাপতি লেখক বেগম মুশতারি শফিকে খ্যাতিমান বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক সম্মাননা প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯
জেইউ/এইচএ/টিসি
** বিএনপির রাজনীতি হাঁটু ও কোমরের ব্যথায় আটকে আছে