আগামী ৮ ডিসেম্বর হতে যাওয়া এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগ ও সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে ‘সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সভা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমিতে দিনব্যাপী চলা এই সভায় আসন্ন সম্মেলনকে সফল করতে দলের নেতারা এমন মতামত উপস্থাপন করেন।
তবে সভায় জেলা আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন না। এ নিয়ে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। যা তাদের সভায় দেওয়া বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্পষ্টও হয়েছে।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও রাজশাহীর বাঘা-চারঘাট আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম বলেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই দুই নেতার দ্বন্দ্ব কেন্দ্রের নেতাদের মধ্যস্থতায় মীমাংসা করা হয়েছে। কেন্দ্রর পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন কমিটির আহ্বায়ক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের মতো একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলার পরও সভাপতি কেন তাকে উপেক্ষা করছেন? এ সময় তিনি দাবি করেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রত্যাশার প্রতিফলন না করা হলে আগামীর সম্মেলন ফলপ্রসূ হবে না।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, গুণগত ও শিক্ষার দিক থেকে জেলা আওয়ামী লীগ অনেক সংগঠিত। উৎসবমুখর পরিবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে। তবে নেতাকর্মী যেভাবে চাইবেন, দল যেভাবে চাইবে, সেভাবে যদি সংগঠন পরিচালিত না হয়, তবে সংগঠন সফল হবে না। আগামীর সম্মেলন সফল করতে উপ-কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ করছে।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, আমি আমার কথা রেখছি। সভাপতি (ফারুক চেধুরী) কথা রেখেছেন কি-না, তা আপনারাই (আওয়ামী লীগ) দেখবেন। উপজেলা থেকে শুরু করে জেলা পর্যন্ত সব স্তরেই সমালোচনা আছে।
সংগঠনের সব ব্যর্থতার দায়ভার নিজে গ্রহণ করে জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আগামীর সম্মেলন সফল করতে হবে। আর সেজন্য কাউন্সিলরদের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত করা হোক।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মেরাজ উদ্দীন মোল্লার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য নূরুল ইসলাম ঠাণ্ডু।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- রাজশাহীর পবা-মোহনপুর আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, বাগমারা আসনের সংসদ সদস্য এনামুল হক, পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগসহ উপজেলা, পৌরসভা ও অঙ্গসংগঠনের নেতারাও বক্তব্য রাখেন।
সভায় তারা দাবি করেন, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিতে বিদ্যমান বিরোধ মীমাংসা করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে আগামীর নেতৃত্ব বাছাই করতে হবে। তাই আগামীর সম্মেলনে কোনো পদে একাধিক প্রার্থী থাকলে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১৯
এসএস/টিএ