বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০ দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
আওয়ামী লীগের নেতারা প্রায়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলেনউল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা কী ছিল? মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তো এটা ছিল না যে, দেশের মানুষের অধিকার হরণ করে নেবেন।
তিনি বলেন, গত দশ বছর আমাদের ওপর অত্যাচার চলছে। কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। লক্ষাধিক মামলায় ২৬ লাখ আসামি করা হয়েছে। কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজনৈতিক দলকে এত বড় ত্যাগ শিকার করতে হয়, সেটা আমার জানা নেই।
নিজ দল ও শরিক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রেসক্লাবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কক্ষে বক্তব্য রেখে হবে না। গ্রামে-গ্রামে, মহল্লায়-মহল্লায় যান। কথাগুলো মানুষকে বলেন। শুধু ওপরের নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না।
বিএনপির নেত্রী লড়াই করছেন, বিএনপি সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করছে দাবি করে মহাসচিব বলেন, কথায় কথায় বিএনপিকে দায়ী করলে হবে না। এখন সময় হচ্ছে ঐক্যের। গোটা জাতিকে এই একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
সরকারের এক মন্ত্রী তার বন্ধু এবং সেই মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হওয়ার একটি প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা হলো। তাকে জিজ্ঞেস করলাম কেমন চলছে? তিনি বলছেন ‘চলছে না’। বললাম, কেন ভাই, এত উন্নয়ন হচ্ছে, ৮ পার্সেন্ট গ্রোথ হয়ে গেছে। জবাবে তিনি বললেন, ‘কী বলবো, দেশের মানুষ তো বলতে শুরু করেছে’। আমি বললাম, এটা বোঝা যাচ্ছে যে, দেশের মানুষ বলতে শুরু করেছে? কানে যায়? চোখে পড়ে?
মির্জা ফখরুল বলেন, আমার খুব কষ্ট হয়। কোনো শাসক যদি দেয়ালের লিখন পড়তো, মানুষের চোখের ভাষা বুঝতো, তাহলে তারা এত অমানুষ হতে পারতো না।
এনপিপি সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিকল্প ধারার (একাংশের) সভাপতি নুরুল আমীন বেপারী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/