প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভপতিত্বে সোমবার (৮ জুন) সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আইনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সরকারি মালিকানাধীন নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড এবং চীনের ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (রিনিউঅ্যাবল)’ নামে কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব এবং এ সংশ্লিষ্ট জয়েন্ট ভেঞ্চার এগ্রিমেন্ট, মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন এবং আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা বাস্তবায়নকল্পে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অভ্যন্তরীণ ও আমদানি করা কয়লা, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস, পরমাণু শক্তি ইত্যাদির সঙ্গে সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৫০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাস্তবায়নের জন্য সরকারি মালিকানাধীন নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড এবং চায়না ন্যাশনাল ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (প্রা.) লিমিটেড (রিনিউঅ্যাবল)’ নামে কোম্পানি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৭ আগস্ট উভয় কোম্পানির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বর্ণিত জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি গঠনের ক্ষেত্রে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার ৫০ শতাংশ এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের শেয়ার ৫০ শতাংশ। জয়েন্ট ভেঞ্চার কোম্পানি পাঁচটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
পাবনা ৬০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প। প্রকল্পের জন্য ২০৫ দশমিক ৬৮ একর জমি দীর্ঘ মেয়াদি বন্দোবস্ত নেওয়া হয়েছে এবং ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি সম্পন্ন হয়েছে। ২০২১ সালের জুনে বাণিজ্যিক উৎপাদনের যাওয়ার কথা রয়েছে।
সিরাজগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প। এ প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি সম্পন্ন হয়েছে। ভূমি লিজ নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ২০২২ সালের জুনে বাণিজ্যিক উৎপাদনের যাওয়ার কথা রয়েছে।
পায়রা ৫০ মেগাওয়াট উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প। প্রকল্পের জন্য উইন্ড ম্যাপিং শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
অন্যান্য স্থানে ২৯০ মেগাওয়াট সৌর ও বায়ুশক্তিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। এসব প্রকল্পের স্থান বাছাই ও ভূমি অধিগ্রহণ চলমান রয়েছে।
প্রস্তাবিত কোম্পানির বৈশিষ্ট তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এটি একটি নবায়নযোগ্য জ্বালানি (সৌর ও বায়ুশক্তি) ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি হবে। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১৬ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধননের বিপরীতে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির শেয়ার ৫০ শতাংশ, যা আট কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধনের বিপরীতে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের শেয়ার ৫০ শতাংশ, যা আট কোটি টাকা।
কোম্পানি গঠনের ফলে সুবিধার কথা তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ কোম্পানির মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানি (সৌর ও বায়ুশক্তি) ব্যবহার করে ৫০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ফলে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনকল্পে বাংলাদেশ সরকার প্রণীত নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা অনুযায়ী গৃহিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথ সুগম হবে।
জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ এবং পরিবেশ দুষণ হ্রাস করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০২০
এমআইএইচ/ওএইচ/