জাদুকরী ফিনিশিংয়ে জুভেন্টাসকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের পথে এগিয়ে গেল টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। আর একের পর এক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি জুভেন্টাস।
কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে ৩-০ গোলে জিতে জিনেদিন জিদানের দল সেমি ফাইনালের দিকেই এগোলো। স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে জোড়া গোল করেন রোনালদো। অবদান রাখেন মার্সেলোর গোলেও।
এই লিগে নিজেদের শেষ সাত কোয়ার্টার-ফাইনালে জেতা রিয়াল বুধবার (১১ এপ্রিল) দ্বিতীয় লেগে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের মুখোমুখি হবে।
জুভেন্টাস স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার রাতে শুরুতেই এগিয়ে থাকে রিয়াল। স্বাগতিকদের বাজে ডিফেন্ডিংয়ের সুবিধা কাজে লাগান পর্তুগাল স্টার। ইসকোর পাস থেকে প্রথম স্পর্শে বল জালে পাঠান তিনি।
এই গোলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা ১০ ম্যাচে গোলের রেকর্ড করেন তারকা ফরোয়ার্ড রোনালদো। ক্লাব ও দেশের হয়ে এটি ছিল তার ৬৪৮ নম্বর গোল। খেলার বেশির ভাগ সময়ই তার কাছাকাছি থাকা মাত্তেও দে শিলিও ব্যস্ত ছিলেন করিম বেনজেমাকে অকার্যকর রাখতে। তা করতে গিয়ে ইতালিয়ান ডিফেন্ডার নিজেই নিজের ফাঁদে পড়ে যান।
খেলার ছয় মিনিটে গোল শোধ করার সুযোগ আসে পাওলো দিবালার সামনে। তবে চমৎকার এক স্লাইডে বিপদমুক্ত করেন সের্হিও রামোস।
খেলার ১২তম মিনিটের ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ হাতছাড়া করেন রাফায়েল ভারানে। অরক্ষিত ফরাসি ডিফেন্ডার হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি।
২৩তম মিনিটে দিবালার দুর্দান্ত ফ্রি-কিকে খুব কাছ থেকে নেওয়া গনসালো হিগুয়াইনের হেড ফিরিয়ে দেন কেইলর নাভাস। ৩৫তম মিনিটে দে শিলিওর নিচু ক্রসে পা ছোঁয়াতে পারেননি দিবালা। বলের দিক একটু পরিবর্তন করে দিতে পারলেই হয়তো কাঙ্ক্ষিত গোল পেয়ে যেতে পারতো ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা।
বারবার পাল্টা আক্রমণী হয়ে ওঠার চেষ্টায় মেতে ওঠে রিয়াল। গোলমুখে এলোমেলো শটও নেয়। তবে ৩৬ মিনিটে টনি ক্রুসের বিদ্যুৎ গতির শটটি ছিল বেশ আকর্ষণীয়।
একটু এদিক-সেদিক হলেই হয়তো গোল সংখ্যা বেড়ে যেত রিয়ালের। ৩৮ তম মিনিটে দিবালার কর্নার কিক থেকে সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি কিয়েলিনি।
৪৫ তম মিনিটে ডাইভ দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন জুভেন্টাসের দিবালা। এরপর ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে রিয়াল মাদ্রিদ।
৫০তম মিনিটে একটুর জন্য লক্ষ্যে থাকেনি রোনালদোর শট। চার মিনিট পর ফাউল করে হলুদ কার্ড পান রামোস। তাই বের্নাবেউয়ে দ্বিতীয় লেগে খেলা হবে না এই ডিফেন্ডারের।
খেলার ধারার বিপরীতে ৬৩তম মিনিটে অসাধারণ এক গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পর্তুগিজ অধিনায়ক। বুফনকে বল বাড়াতে গিয়ে তালগোল পাকান কিয়েলিনি। দুরূহ কোণ থেকে শট নেননি রোনালদো। তার বাড়ানো বলে লুকাস ভাসকেসের বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান বুফন।
তবে তখনও বিপদ কাটেনি জুভেন্টাসের। দানি কারভাহালের ক্রসে দারুণ এক কিকে বল জালে পাঠান রোনালদো। তখন হতাশায় যেন নুয়ে পড়েন বুফন।
দুই মিনিট পর বিপদ আরও বাড়ে জুভেন্টাসের। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় দিবালাকে। দিশা হারিয়ে ফেলা স্বাগতিকদের জালে ৭২তম মিনিটে বল পাঠান মার্সেলো। তার গোলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে রোনালদোরও।
৮৭তম মিনিটে মাতেও কোভাচিচের শট ঠেকানোর কোনো সুযোগই ছিল না বুফনের। তবে বদলি নামা খেলোয়াড়ের শট ক্রসবারে লেগে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যবধান বাড়েনি। তিন মিনিট পর রোনালদোর শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন জুভেন্টাস গোলরক্ষক।
সুযোগ হাতছাড়ার দিনই ছিল জুভেন্টাসের। বারবার সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি খেলোয়াড়রা। অতিরিক্ত সময়ে হিগুয়াইনের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান নাভাস। পরের মিনিটে তাকে একা পেলেও বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি হুয়ান কুয়াদ্রাদো।
শেষ মেষ হতাশাকে পুঁজি করেই মাঠ ছেড়েছে ম্যাসিমিলিয়ানো এলগ্র্রির দল জুভেন্টাস। আর নিজেদের রাতে উৎসব করেছে রিয়াল! সেক্ষেত্রে বলাই যায় রাতটিই ছিল রিয়ালের!
বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৮
এমএ/