ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

মাথায় আঘাত পেয়ে হিউজের কথা মনে পড়েছিল স্মিথের

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৯
মাথায় আঘাত পেয়ে হিউজের কথা মনে পড়েছিল স্মিথের বাউন্সারে আঘাত পাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে স্মিথ-ছবি: সংগৃহীত

অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে দলের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করছিলেন স্টিভেন স্মিথ। প্রথম টেস্টের দুর্দান্ত ফর্ম দ্বিতীয় টেস্টেও টেনে এনেছিলেন দারুণভাবে। কিন্তু হঠাৎ ইংলিশ সেনসেশন জোফরা আর্চারের প্রতি ঘণ্টায় ১৪৮ কিলোমিটার গতির এক বাউন্সার তার ঘাড়ে আঘাত হানে।

সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন স্মিথ। ঠিক ওই মুহূর্তে তার মাথায় কি চলছিল তা নিয়ে এতদিনে মুখ খুললেন সাবেক অজি অধিনায়ক।

স্মিথ জানিয়েছেন, লর্ডসের টার্ফে লুটিয়ে পড়ার সময় তার মনে পড়ছিল প্রয়াত সতীর্থ ফিলিপ হিউজের কথা। নিউ সাউথ ওয়েলসের পেসার শন অ্যাবটের এক বাউন্স বলে হুক শট খেলতে গিয়ে ঘাড়ে আঘাত পেয়েছিলেন হিউজ। ওই আঘাতে কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। পরে চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে বলা হয়, ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় শোকগাথা।

আর্চারের বাউন্সে আঘাত পাওয়ার পর স্মিথকেও মাঠ থেকে তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু পরে আবার ব্যাট হাতে নেমে পড়েন তিনি। তবে ৯২ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে শেষ হয় তার ইনিংস। এরপর অবশ্য তার অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়ে পড়ে। যেজন্য দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে মাঠেই নামায়নি অস্ট্রেলিয়া। কনকাশনের (মাথা ঘুরা, চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া) জন্য টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন মার্নাস লাবুশানে।

স্মিথের ইনজুরি তাকে এতটাই ভোগাচ্ছে যে তৃতীয় টেস্টের দলেই রাখা হয়নি তাকে। ওই টেস্ট বেন স্টোকসের বীরত্বে ১ উইকেট হাতে রেখে জিতে যায় ইংল্যান্ড। সিরিজেও এখন ১-১ সমতা চলছে।

লিডসে তৃতীয় টেস্ট শেষে সংবাদমাধ্যমকে স্মিথ বলেন, ‘(ওই সময়) আমার মাথায় কিছু বিষয় ঘুরছিল, বিশেষ করে মাথার যেখানটায় আঘাত পেয়েছিলাম সেটা। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমি কী বলতে চাইছি। কয়েক বছর আগের ঘটনাটার কথা বলতে চাইছি। তার পর ভাবলাম, আমি ঠিক আছি। কিছুটা মন খারাপ হলেও পুরো বিকেল ভালোই ছিলাম। ’

স্মিথ আরও জানান, প্রথম ইনিংসে দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে নামার সময়ও তিনি স্বাভাবিকই ছিলেন। আঘাতটাকে শুরুতে তিনি গুরুত্ব দেননি। কিন্তু পরে তার ‘ডিলেড কনকাশন’ দেখা দেয়। স্মিথের কাছে ‘ডিলেড কনকাশন’ ব্যাপারটা অনেকটা ‘ছয়টি বিয়ার’ খাওয়া অর্থাৎ মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ করার মতো মনে হয়েছে।

স্মিথ বলেন, ‘সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত তেমন সমস্যা হয়নি। এরপর থেকেই প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। চিকিৎসক যখন জানতে চাইলেন আমি বললাম, মনে হচ্ছে যেন আমি গত রাতে ছয় বোতল বিয়ার পান করেছি এবং অথচ আমি খাইনি। এই অনুভূতি কয়েকদিন আমার মাথায় আটকে ছিল। ’

ইনজুরির ধাক্কা অবশ্য অনেকটাই সামলে উঠেছেন স্মিথ। অনুশীলনও শুরু করেছেন পুরো দমে। আগামী সপ্তাহেই শুরু হতে যাওয়া সিরিজের চতুর্থ টেস্টেই তাকে ফিরে পাওয়ার আশা করছে অস্ট্রেলিয়া দল। তিনি নিজেও এজন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পরবর্তীতে দুর্ঘটনা এড়াতে নিজের হেলমেটের সঙ্গে ‘স্টেমগার্ড’ যুক্ত করার চিন্তা-ভাবনাও শুরু করেছেন তিনি। তবে এটা যুক্ত করায় তার মনের সায় নেই। কিন্তু বিপদ তো আর বলে-কয়ে আসে না। তাই সাবধান থাকাই ভালো মনে করছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৯
এমএইচএম/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।