বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি জিতলেই সিরিজের ফাইনালে পা রাখবে সাকিববাহিনী।
আফগানিস্তান ম্যাচে মুশফিকুর রহিমকে ওপেনিংয়ে নামানোর সিদ্ধান্ত কাজে লাগেনি। ফলে আবারও হয়ত মিডল অর্ডারে ফিরে যাবেন তিনি। সৌম্যকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ লিটন দাসের সঙ্গে ওপেন করতে পারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বাংলাদেশ ইমার্জিং একাদশের হয়ে শান্ত কিছুদিন আগেই ৭৭, ১৩৩ এবং ৮৮* রানের ঝলমলে তিনটি ইনিংস খেলে এসেছেন।
দ্বিতীয় ম্যাচে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে তা যথেষ্ট নয়। তাকে ঠিক আগের সেই ‘ফিনিশার’ মনে হয়নি একেবারের জন্যও। সাব্বির আগের মতোই ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে আছেন। তার সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন নেই, কিন্তু দায়িত্ববোধ আর আত্মবিশ্বাসের প্রচণ্ড ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা স্বাভাবিক। মোসাদ্দেক হোসেন তবু চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অলরাউন্ডার তকমার প্রতিদান দিতে পারছেন না তিনি।
বল হাতে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের পারফরম্যান্স অসাধারণ। কিন্তু তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারছেন না কেউই। মোস্তাফিজুর রহমান উইকেট পেলেও তা ঠিক সময়ে পাচ্ছেন না। রানও খরচ করছেন বেশি। আফিফ কিন্তু ভালো বোলারও। কিন্তু তাকে এখন পর্যন্ত ব্যবহারই করেননি সাকিব। কারণটা এখনও অজানা। তাইজুলও ঠিক মানিয়ে নিতে পারেননি। সবমিলিয়ে বোলিংয়ের অবস্থা মোটেই সন্তোষজনক নয়।
তবে দলের বড় দুশ্চিন্তা অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়েই। এখন পর্যন্ত তাকে ব্যাট কিংবা বল হাতে চেনা রূপে দেখা যায়নি। আর অধিনায়ক সাকিবের পারফরম্যান্স তো রীতিমত হতাশাজনক। বিশেষ করে দ্বিতীয় ম্যাচে সৌম্য সরকারকে অসময়ে বোলিংয়ে আনার সিদ্ধান্ত আর আফিফ হোসেন ধ্রুব’র হাতে একবারও বল তুলে না দেওয়া অনেককেই বিস্মিত করেছে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে স্কোয়াডে ৪টি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান, সৌম্য সরকার, আবু হায়দার রনি এবং ইয়াসিন আরাফাত মিশুকে স্কোয়াড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। পরের দুই ম্যাচে রুবেল ও শফিউলের সঙ্গে নতুন মুখ হিসেবে নেওয়া হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্ত, নাঈম শেখ ও আমিনুল বিপ্লবকে। এই তিনজনই এর আগে কখনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেননি।
অন্যদিকে ছন্নছাড়া বোলিং বিভাগ জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে দুর্বল দিক। কাইল জার্ভিস ও টেন্ডাই চাতারা উইকেট পেলেও রান খরচ করেছেন ওভারপিছু ১০.৫০ করে। আইনস্লে লভু এবং নেভিল মাদজিভাও রান খরচে অকৃপণ। শন উইলিয়ামস ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও চলতি সিরিজে ৬.৭১ ইকোনমি রেট নিয়ে বল হাতে দলের সেরা।
ব্যাটিংয়ে ব্রেন্ডন টেইলর ভালো শুরুর পর উইকেট বিলিয়ে এসেছেন। ক্রেইগ আরভিনও ব্যর্থ। তবে আফগানদের বিপক্ষে ৪২ রান করা রেগিস চাকাভাকে আত্মবিশ্বাসী বলেই মনে হয়েছে। রায়ান বার্ল বাংলাদেশ ম্যাচে ঝড় তুলেছিলেন। দুই ম্যাচে তার রান ৮২, স্ট্রাইক রেট ১৪৩!
বাংলাদেশের জন্য জিম্বাবুয়েও এখন শক্ত প্রতিপক্ষ। প্রথম ম্যাচে তো স্বাগতিকদের প্রায় হারিয়েই দিয়েছিল মাসাকাদজাবাহিনী। পরের ম্যাচে আফগানদেরও কাঁপিয়ে দিয়েছিল দলটি। দুই ম্যাচেই জিম্বাবুইয়ানদের লড়াইয়ের ক্ষমতা সবারই নজর কেড়েছে। তবে মূল ভয়টা বাংলাদেশেরই বেশি। ক্ষয়িষ্ণু এক ক্রিকেট শক্তির বিপক্ষেও এখন হেরে যাওয়ার শঙ্কা পেয়ে বসেছে টাইগারদের।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন, লিটন দাস, আফিফ হোসেন, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাজমুল হোসেন শান্ত।
জিম্বাবুয়ের সম্ভাব্য একাদশ: ব্রেন্ডন টেইলর (উইকেটরক্ষক), হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), রায়ান বার্ল, গ্রেইগ আরভিন, শন উইলিয়ামস, রেগিস চাকাভা, আইনস্লে লভু, টিনোটেন্ডা মুতোম্বোজি, নেদিল মাদজিবা, কাইল জার্ভিস, টেন্ডাই চাতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯
এমএইচএম