এমভি মধুমতি থেকে (ঢাকা-খুলনা): রাজধানী ঢাকা থেকে লম্বা সময়ের অবসর নিয়ে যারা সুন্দরবন দেখতে চান তারা ভ্রমণ করতে পারেন জলপথে। সদরঘাট থেকে দু’টি লঞ্চ খুলনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
এর মধ্যে একটি এমভি মধুমতি। এই লঞ্চ প্রতি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সদরঘাটের লালকুঠি রকেট ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। অপর লঞ্চটির নাম এমভি বাঙালি। এটিও একই ঘাট থেকে ছেড়ে যায় প্রতি সোমবার ও শুক্রবার।
জলপথে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে যাদের, তাদের কাছে এই যাত্রার আনন্দটা পরিচিত। কিন্তু যারা কখনো জলপথে ভ্রমণ করেননি, তাদের জন্য এক নতুন অ্যাডভেঞ্চার ঢাকা থেকে খুলনার জলপথ।
নদীর জল কেটে কেটে এমভি মধুমতি যখন এগিয়ে যায়, তখন দুই পাশের গ্রাম আর এর প্রকৃতি মুগ্ধ করবেই। মধ্যরাতে নদীর ওপর ঝুলতে থাকা চাঁদের মায়া উদ্বেলিত করবে আরও।
লালকুঠি রকেট ঘাট থেকে খুলনা পর্যন্ত যেতে অসংখ্য নদী অতিক্রম করতে হয়। এক একটি নদীর বৈশিষ্ট্য এক এক রকম।
যাওয়ার পথে এমভি মধুমতি থেকে চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি, কাউখালি, হুলারহাট, চরখালি, মাথুয়া, মোরেলগঞ্জ, মংলা, খুলনাসহ ১২টি ঘাটে ওঠা-নামার সুযোগ রয়েছে।
লঞ্চটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ১ হাজার ৪শ’। এর মধ্যে ডেকেই ধরে ১ হাজার ২শ। এর গতি কখনও ঘণ্টায় সাড়ে নয় নটিক্যাল মাইল, আবার কখনো সাড়ে ১০-১১ নটিক্যাল মাইলও হয়।
অন্য লঞ্চগুলোর তুলনায় দ্রুতগামী এমভি মধুমতির পরিবেশও বেশ পরিচ্ছন্ন। এতে মোট ৬০টি কেবিন রয়েছে। এর মধ্যে ডাবল কেবিন রয়েছে ৩৮টি, সিঙ্গেল ৪টি, ফ্যামিলি সুইট ৪টি এবং সেমি ডাবল কেবিন ১৪টি।
চার্ট অনুযায়ী সদরঘাট থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত ডাবল কেবিনের ভাড়া ৪ হাজার ৫৯০ টাকা। সিঙ্গেল কেবিনের ভাড়া ২ হাজার ৫ টাকা, সেমি ডাবল ভাড়া তিন হাজার ১০৫ টাকা।
এমভি মধুমতির রিজার্ভ মাস্টার মাসুদ পারভেজ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চাই লঞ্চটি সপ্তাহে অন্তত দুই দিন চলাচল করুক। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেয় না। তাছাড়া যাত্রীদেরও চাপ খুব বেশি একটা থাকে না।
এই রুটে লঞ্চ চালাতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় জানিয়ে মাসুদ পারভেজ বলেন, প্রাইভেট লঞ্চগুলোর অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে সরকারি এই লঞ্চগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ওরা চায় না, সরকারি কোনো লঞ্চ থাকুক। এ নিয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো লাভ হয় না।
এর একটি সমাধানও প্রত্যাশা করেন তিনি।
এমভি মধুমতির যাত্রী কামরুন নাহার বাংলানিউজকে বলেন, লঞ্চের সেবা মোটামুটি ভালোই আছে। তাছাড়া গতিও অনেক বেশি।
তিন তলাবিশিষ্ট এই লঞ্চের দোতলা ও তিন তলায় রয়েছে সব কেবিন। দোতলায় ভিভিআইপি কেবিন। তৃতীয় তলায় নামাজ পড়ার জন্য যে খোলা জায়গা রয়েছে, রাত হলে সেখানেও মানুষের ভিড় জমে যায়। এছাড়া প্রতিটি ফ্লোরেই রয়েছে ক্যান্টিন। তবে খাবারের দাম বাইরের তুলনায় একটু বেশিই বোঝা গেল।
লঞ্চটিতে প্রতি ঘণ্টায় ২শ লিটার জ্বালানি খরচ হচ্ছে। আবার চলাচল না করলেও ঘাটে বসেই এর পেছনে খরচ করতে হয় অনেক টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১০১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬,২০১৬
এসএম/এসএনএস/এইচএ/