ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

মাজার মোড়ের চা-পানেই তৃপ্তি !

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
মাজার মোড়ের চা-পানেই তৃপ্তি ! ছবি: আবু বকর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সূর্য ডুবেছে বেশ কিছুক্ষণ। শরীরে লাগছে উত্তরের শীতল বাতাস। মৃদু কাঁপুনি নিয়েই গন্তব্য খানজাহান (র.) মাজার মোড়ে। দূর থেকেই চোখে পড়ছে মহাসড়কের পাশে ছোট ছোট দোকানগুলো ঘিরে মানুষের জটলা।

বাগেরহাট থেকে: সূর্য ডুবেছে বেশ কিছুক্ষণ। শরীরে লাগছে উত্তরের শীতল বাতাস।

মৃদু কাঁপুনি নিয়েই গন্তব্য খানজাহান (র.) মাজার মোড়ে। দূর থেকেই চোখে পড়ছে মহাসড়কের পাশে ছোট ছোট দোকানগুলো ঘিরে মানুষের জটলা।

কারও হাতে চায়ের পেয়ালা, কেউ চিবাচ্ছেন পান। ছোট ছোট দলে জমেছে উঠেছে সন্ধ্যার আড্ডা। কেউ এসেছেন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে, কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ আবার দূরদূরান্ত এসেছেন ঘুরতে এসেছেন।

বন্ধু, আত্মীয় বা পরিচিতদের মুখে সবাই শুনেছেন খান জাহান আলী মাজারের চা আর পানের সুখ্যাতি। তাই স্বাদ নিতে ছুটে আসা। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নানা বয়সী মানুষের ভিড়ে নিরিবিলি সন্ধ্যায় এখানে নামে উৎসবের আমেজ।
খানজাহান আলীর মাজার মোড়ে জমে উঠেছে চায়ের দোকান

মাজারে চা খেতে আসা সাইফুল ইসলাম জানান, ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন তিনি। ষাট গম্বুজ মসজিদ, খানজাহান আলীর মাজার ও সুন্দরবন দেখতে উদ্দেশ্য নিয়ে বাগেরহাট এসেছেন তিনি। থাকছেন বাগেরহাটে এক আত্মীয়ের বাসায়। তাদের মুখে শুনে সন্ধ্যার অবসরে  এসেছেন মাজারে।

তিনি বলেন, ‘বাগেরহাটে এসে সবার মুখে মাজারের মিষ্টি পান ও গরুর দুধের চায়ের কথা শুনে এসেছি। খুবই সুসাদু, বিখ্যাত! তাইতো সবাই মিলে চলে এলাম। ’
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার সাইফুল ইসলামের স্ত্রী তৈফিকা নাজনিন বলেন, ‘এখানকার পরিবেশটা দারুণ। এখানে চা আর পানের অর্ডার করে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। তবু বাগেরহাট এসে মাজার মোড়ের চা আর পান ছাড়া ট্যুরটা (ভ্রমণ) সত্যি অতৃপ্তই থেকে যেত। ’
খানজাহান আলী মাজার মোড়ে চায়ের দোকানে মানুষের ভিড়

বাগেরহাটের শালতলা এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী তানিম আহম্মেদ বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে সন্ধ্যা হলেই শহর থেকে চা খেতে মাজার মোড়ে আসি। তিন-চার বছর আগেও এখানে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি দোকান ছিলো। গরুর দুধের চা আর বাগেরহাটের বিখ্যাত বাহারি মিষ্টি পানের নেশায় শহর ছেড়ে সবাই এখানে চা খেতে আসতেন।

এখন খানজাহানের মাজার মোড়টা দুধ চা আর মিষ্ট পানের জন্য বিখ্যাত হয়ে গেছে। আড্ডা, অবসরে সবাই আসেন এখানে।

মাজার মোড়ের যাত্রী ছাউনির চা দোকানি শেখ আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, এখানের গরুর দুধের চা বিক্রির প্রথম দোকানটি আমার। অল্প দিনেই আমর দোকানটি জমজমাট হয়ে ওঠে। এখন মাজার মোড় ঘিরে ছোট বড় প্রায় অর্ধশত চা-পানের দোকান। বিকাল, সন্ধ্যা হলেই জমজমাট হয়ে ওঠে এসব দোকান।
পানের মধ্যে হরেক রকমের মসলা দিচ্ছেন দোকানিরা
চায়ের পাশাপাশি মিষ্টি পানের জন্য বিখ্যাত আমাদের দোকান।

দোকানে পান তৈরিতে ব্যস্ত শেখ হারুন উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই মাজার মোড়ে আসেন কেবল চা আর পান খেতে। আমরা কিসমিস, বাদাম, জেলিসহ ১৫ থেকে ১৮ ধরণের মসলা, মিষ্টি জর্দ্দা দিয়ে পান তৈরি করি। সবাই পান খেতে এখানে আসে এবং মিষ্টি পান নিয়ে যায়।

বিকেল থেকে রাত ১০টা সাড়ে ১০টা পর্যন্ত প্রতিদিন তাদের দোকানে গড়ে আটশ’ থেকে এক হাজার পান বিক্রি হয় বলে জানান তিনি।

এই দোকানটির মতো মাজার মোড়ের সব দোকানগুলোর বেচাকেনাও একই রকম বলে জানান দোকানিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৬
এসআইএইচ/বিএস

সহযোগিতায়

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।