মুগ্ধতা ছড়ানো এমন রোম্যান্টিক পরিবেশ বোধহয় শুধু কক্সবাজার শহরের ঘিঞ্জি পরিবেশ থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরের মারমেইড বিচ রিসোর্টেই পাওয়া সম্ভব। প্রকৃতি এখানে খেলা করে মানুষের সঙ্গে।
কটেজের বাইরে বড় করে লেখা নিজের নামটি হয়ে ওঠে হঠাৎ বিস্ময়। প্রকৃতিকে নিজের মতো থাকতে দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে এখানকার ২৬টি কটেজ। প্রতিটির রয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। ঋতু, দিন, রাতের সঙ্গে বদলে যায় মারমেইডের আবেদন।
সাগরতীরের মারমেইডে রয়েছে অবকাশ যাপনের সব সুব্যবস্থা। দিনের আলো কমতেই প্রাকৃতিক পরিবেশ হয়ে ওঠে আলো ঝলমলে। লাল, হলুদ, নীল, সবুজ- নিভু নিভু আলোর মধ্যেও রয়েছে ব্যতিক্রমী সব ভাবনা গাঁথা। কোনো বাতি ঢেকে দেওয়া রঙিন কাপড়ে, কোনোটি রঙিন কাচের বোতলমোড়া, কোনোটিতে আবার উপুড় হয়ে বসেছে ফেলনা টিনের ছিদ্র করা বালতি।
বাতিগুলো বসানোও হয়েছে নান্দনিকভাবে। কোনোটি পথের দু’ধারে সারিবদ্ধ হয়ে গন্ধ বিলানো স্পাইডার লিলিকে আলোকিত করে সঙ্গ দিচ্ছে, পথ দেখাচ্ছে পর্যটকদের, কোনোটি গাছের শরীরে, কোনোটি পাতার আড়ালে লুকিয়ে করছে আলো-আঁধারির খেলা। কংক্রিটের রাস্তায় সাগরের তীরে ভেসে আসা কাচ দিয়ে বসানো সুন্দর ডিজাইন। মৃদু আলোর প্রতিফলনে কাচগুলো ঝলমলে।
কাঠ-বাঁশের নান্দনিক খাবারের ঘরের পরেই বালির বিচ। বিচে বসানো কাঠের মঞ্চ, সারি ধরে কাবানা (শোয়া বা বসার জন্য চারদিক খোলা গদিওয়ালা বিশেষ চৌকি)। মধুচন্দ্রিমায় আসা যুগলদের সবচেয়ে প্রিয় জায়গা এটি। আধোআলোয় প্রিয়জনকে পাশে নিয়ে সমুদ্রের গান শোনা। আর ক্যান্ডেল লাইট ডিনার এখানে একেবারেই স্পেশাল। সঙ্গে বিচ মিউজিক।
জোয়ারের পানি যখন একেবারেই মারমেইডের কাছে চলে আসে চ্যানেল ধরে, তখন সেখানে বসানো হয় টেবিল। যুগলরা মোমের আলোয় সে পানিতে পা ভিজিয়ে সারেন ডিনার। আর ডিনারটিও সাজানো হয় মধুচন্দ্রিমা স্পেশাল করে। সি ফুডের জন্য এ তল্লাটে বিখ্যাত মারমেইডের ডিনারে আঁচ করা যায় সে সারপ্রাইজ। প্রিয়জনকে যারা অনেক চমক উপহার দিতে চান তাদের জন্য উপযুক্ত বাছাই মারমেইড বিচ রিসোর্ট। এমনটাই জানাচ্ছিলেন মারমেইডের জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান।
রাতে বিচবাইক চালানোর ব্যবস্থাও রয়েছে শুধু এখানে। চাইলে সাবরাঙে বসেও সারতে পারেন ডিনার। পানির মধ্যে আলোর সাজে সাবরাঙ (দুই মাথা বাঁকানো নৌকা বিশেষ) হয়ে ওঠে মোহনীয়। যদি কেউ বাচ্চাসহ পরিবার নিয়ে এখানে বেড়াতে আসেন তাদের জন্যও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। বাচ্চারা যেনো বিরক্ত না হয় সেজন্য রয়েছে পর্যাপ্ত খেলনা। দিব্যি খেলনা গাড়ি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারে তারা।
রাতে রুমে ব্যবহার করা আলোয়ও রয়েছে ভিন্নতা, স্বতন্ত্রতা।
খাবার-দাবার কিন্তু শুধু ইনহাউজ গেস্টদের জন্য নয়, শহরে বেস্ট সি-ফুডের স্বাদ নিতে চাইলে যে কেউ চলে আসতে পারেন মারমেইডে। নিরিবিলি পরিবেশ হওয়ায় কক্সবাজারে আসা বিদেশি পর্যটকদেরও প্রথম পছন্দ থাকে মারমেইড।
মারমেইডের নতুন সংযোজন সুইমিং পুল ভিলাও রাতে হয়ে ওঠে অপরূপ। চাইলে রাতেও নামতে পারেন পুলে। অরগ্যানিক খাবার, পরিবেশনা, আপ্যায়ন, কর্মীদের ব্যবহারেও অনন্য এ প্রতিষ্ঠানটি। রাতভর কেউ বিচের পাশে কাবানায় কাটাতে চাইলেও রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আর সাগরপাড়ে বসে বিশাল আকাশে তারা দেখার সুযোগও পাবেন মারমেইডে। সঙ্গে পোকার গান। জোছনা রাত উপভোগের জন্য তাই চলে আসতে পারেন এ বিচ রিসোর্টে।
আরও পড়ুন: অতিথি আপ্যায়নের মারমেইড স্টাইল
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৭
এএ/এসএনএস