জামালপুর: জামালপুরের যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও দশানী নদীর চরে এখন সবুজের বিপ্লব। সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে এমফরসি প্রকল্পের আওতায় এ এলাকার কৃষকরা তরমুজ, শিম, বেগুন, মরিচ, গোল আলু, ভুট্টা, সরিষা, তিলের পাশাপাশি চাষ করছেন চীনা বাদাম।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার যমুনার দুই পাশে জেগে ওঠা চরে বাদাম চাষ হয়।
দেশের অন্যান্য জেলায় উৎপাদিত বাদামের তুলনায় জামালপুরের বাদাম আকারে বেশ বড় হয়। ফলে চাহিদাও ব্যাপক। দেশের চাহিদার প্রায় ২০ ভাগ বাদাম পাওয়া যায় জামালপুরে। এসব বাদাম রাজধানীসহ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাদামের মূল মৌসুমে অবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাদামের ফলন বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।
ইসলামপুর উপজেলার সাপধরী এলাকার বাদাম চাষি ইব্রাহিম জানান, এবার বৃষ্টিপাত ও শীত কম হওয়ায় বাদাম গাছে রোগ-বালাই নেই বললেই চলে। ফলে ফলন বেশি হবে।
গোয়ালেরচর এলাকার বাদাম চাষি সফিকুল ইসলাম জানান, আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই বাদাম তোলা শুরু হবে। অবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার তুলনামূলক বাদামের ফলন বেশি হবে।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাকিয়া সুলতানা বাংলানিউজকে জানান, জামালপুর চলতি বছর ৬৮০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হচ্ছে।
হেক্টর প্রতি চীনা বাদামের গড় ফলন মাত্র ১.৫২ মেট্রিক টন। উন্নত প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে চীনা বাদামের ফলন বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরও জানান, জামালপুরে মূলত বাসন্তী বাদাম, ঝিংগা বাদাম, ত্রিদানা বাদাম ও বারি বাদাম চাষ করা হয়। তবে বাসন্তী বাদামের চাষ হয় বেশি।
বাদাম মুলত বছরে দুই বার চাষ করা যায়। বাসন্তী বাদাম মূলত দুই দানা থাকে। এছাড়া ঝিংগা বাদামে তিন থেকে চারটি করে দানা থাকে। ত্রিদানা বাদামেও তিন-চারটি করে দানা থাকে।
চীনা বাদাম একটি স্বল্পমেয়াদি অর্থকরী ফসল। এটি একটি উৎকৃষ্ট ভোজ্য তেলবীজ। চীনা বাদামের বীজে শতকরা ৪৮ থেকে ৫০ ভাগ তেল এবং শতকরা ২২ থেকে ২৯ ভাগ আমিষ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২২
এসআই