ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ইউটিউব দেখে জাম্বু কোয়েল পালনে সফল জাহাঙ্গীর

কাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২২
ইউটিউব দেখে জাম্বু কোয়েল পালনে সফল জাহাঙ্গীর নিজ খামারে জাম্বু কোয়েলসহ সফল উদ্যোক্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন

রাজবাড়ী: ইউটিউব দেখে জাম্বু কোয়েল পাখির খামার করে সফলতা পেয়েছেন মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

তরুণ এই উদ্যোক্তা রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বড় বাংলাট গ্রামের ৪ নং ওয়ার্ডের মৃত আমির হোসেনের ছেলে।

নিজ বাড়িতেই পাখির খামারটি তৈরি করেছেন জাহাঙ্গীর। তার সাফল্য দেখে জাম্বু কোয়েল পাখি পালনে আগ্রহী হচ্ছেন রাজবাড়ী জেলার অনেকেই । নতুন এ জাতের কোয়েল পাখি পালন বৃদ্ধিতে তারা সরকারি সহায়তা চাইছেন।

জানা গেছে, দু’বছর আগে ইন্টারনেটে জাম্বু কোয়েল সম্পর্কে জানতে পারেন জাহাঙ্গীর। এরপর ভারত থেকে বীজ ডিম এনে ইউটিউব দেখে নিজের হ্যাচারিতে বাচ্চা উৎপাদন করেন কয়েলের।  

২০২০ সালে ৫ শতাংশ জমিতে ঘর বানিয়ে শুরু করেন জাম্বু কোয়েল পাখির খামার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি জাহাঙ্গীরকে। বর্তমানে এ উদ্যোক্তার খামারে আড়াই হাজার জাম্বু কোয়েল পাখি রয়েছে।

খামারে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজারের বেশি ডিম সংগ্রহ করেন জাহাঙ্গীর। সেগুলো নিজের হ্যাচারিতে ফুটিয়ে বাচ্চা উৎপাদন করছেন নিয়মিত।  

প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫ হাজারের বেশি বাচ্চা উৎপাদন হয়। একদিন বয়সী বাচ্চা প্রতিটি ১২ টাকা দরে ও পূর্ণ বয়স্ক কোয়েল প্রতি কেজি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেন তিনি।

এদিকে জাহাঙ্গীরের জাম্বু কোয়েলের খামার দেখতে দূর-দূরান্ত থেকেও অনেক আগ্রহী উদ্যোক্তা আসেন।

খামার দেখতে আসা কলেজ ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি হাঁস-মুরগি পালন করি। জাহাঙ্গীর ভাইয়ের সাফল্য দেখে আমিও ১০০টি জাম্বু কোয়েল পাখি পালন করছি। কোয়েল পাখি খাবার কম খায়। রোগে কম ভুগে। মুরগি থেকে জাম্বু কোয়েলের মাংস স্বাদ বেশি।  

জাহাঙ্গীরের খামার থেকে বাচ্চা নিয়ে নিজে খামার করেছেন মো. আবু তালেব।  

তিনি বলেন, আমি আগে বেকার ছিলাম। এই খামার থেকে ১ দিনের ৫০০ বাচ্চা কিনে নিয়ে নিজে খামার করেছি। বর্তমানে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৩৫০ ডিম সংগ্রহ করি। আমি নিজেই এখন অন্যকে কাজ দিতে পারি। জাম্বু কোয়েল পালনে কম খরচে লাভ বেশি।

নিজের খামার ও সফল উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়ে মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সাধারণ কোয়েলের চেয়ে আকারে বড় ও ওজন বেশি হওয়ায় জাম্বু কোয়েল পাখির চাষ দিন দিন বাড়ছে। অল্প পরিশ্রম ও স্বল্প পুঁজিতে কম সময়ে অধিক লাভবান হওয়া যায় এই পাখি পালনে। তাই আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে।  

তিনি আরও বলেন, জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে কোনো প্রকারের সহযোগিতা এখন পর্যন্ত পাইনি। ঋণ সহায়তা পেলে আমার মতো গ্রামীণ খামারিরা বড় পরিসরে খামার করতে পারবে। ব্রয়লার,সোনালী,লেয়ারসহ বিভিন্ন মুরগী পালনের চেয়ে খরচ কম ও লাভ বেশি হয় জাম্বু কোয়েল পাখিতে। তাই এটি একটি সম্ভাবনাময় পোল্ট্রি শিল্প হতে পাবে ভবিষ্যতে।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল হক সরদার বলেন, কম পুঁজি বিনিয়োগে লাভ বেশি হওয়ায় সাধারণ কোয়েল থেকে জাম্বু কোয়েলের পালন দিন দিন বাড়ছে । খামারিদের নিয়মিত পরামর্শ ও ওষুধ টিকা দেওয়া হচ্ছে। সঠিক নিয়মের মাধ্যমে নিম্ম হার সুদে ঋণ সহায়তা দেওয়ারও সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২৪৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।