গাইবান্ধা: চারদিকে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ জুড়ে সবুজের সমারোহ। জমিতে ফলেছে শীতের নানা রকমের সবজি।
স্থানীয়দের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন ভিন্ন রঙের এ বাঁধাকপি দেখতে-কিনতে।
উচ্চ ফলনের পাশাপাশি বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় ‘লালিমা’ নামে নতুন জাতের এ বাঁধাকপি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়ায় গিয়ে বেগুনী রঙের এ বাঁধাকপির দেখা মেলে। যা কৃষকদের দেখাচ্ছে রঙিন দিনের স্বপ্ন।
ওই গ্রামের কৃষক বেবেগুনী হোসেন ৪০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন লালিমা জাতের বেগুনী বাঁধাকপি। জমিতে শোভা পাচ্ছে সারি সারি বেগুনী বাঁধাকপি। ওপরের বেগুনী আভাযুক্ত সবুজ পাতা ছিঁড়ে ফেললেই বেরিয়ে আসছে টকটকে বেগুনী রঙের বাঁধাকপি। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।
বেলাল হোসেন জানান, ঝুঁকি নিয়ে তিনি সব সময় নতুন জাতের সবজি চাষ করে আসছেন। প্রতিবারই তাতে সফলতা পেয়েছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর স্থানীয় ডিলারের মাধ্যমে তিনি ঢাকা থেকে কুরিয়ার সার্ভিসে ইউনাইটেড কোম্পানির লালিমা জাতের ছয় প্যাকেট বেগুনী বাঁধাকপির বীজ সংগ্রহ করেন। প্রতি প্যাকেটের দাম রাখা হয়েছে ৬০০ টাকা। জমি তৈরি শেষে বীজগুলো বপন করেন। আবহাওয়া ও মাটি ভালো থাকায় ফলন হয়েছে ভালো।
উৎপাদন খচর ও আয় সম্পর্কে বেলাল বলেন, সর্বমোট ১৫ হাজার টাকা খচর হয়েছে চাষ করতে। জমিতে কপি ফলেছে সাত হাজারটি। পাইকারি ও খুচরা প্রতি পিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৩০ টাকা করে। খরচ বাদ দিলে এ মৌসুমে দুই লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছি।
বেগুনী বাঁধাকপিতে ঔষধি গুণ রয়েছে। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। আমার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে এলাকার অনেকেই বেগুনী রঙের বাঁধাকপি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন, যোগ করেন তিনি।
বেলালের সাফল্যে বেগুনী বাঁধাকপি চাষে উদ্বুদ্ধ প্রতিবেশী কৃষক মেহের আলী ও ইব্রাহীম আলী জানান, বেগুনী বাঁধাকপি দেখতে সুন্দর ও খেতে সুস্বাদু। বাজারে দামও পাওয়া যায় ভালো। এজন্য এ বাঁধাকপি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ বেলাল উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে ফুলছড়িতে ৭০ শতাংশ জমিতে বেগুনী বাঁধাকপি চাষ হয়েছে। এ বাঁধাকপি খুবই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সবজি। এতে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, সি, কে, পটাশিয়াম ও প্রচুর আয়রন রয়েছে। যা মানবদেহের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। কৃষক বেলালের সাফল্যে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও বেগুনী বাঁধাকপি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। তাদের মাঠ পর্যায়ে চাষের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩
এসআই