সাতক্ষীরা: কেউ চারা গাছের পরিচর্যা করছেন, কেউবা ক্ষেতে সেচ দিচ্ছেন। এভাবেই চলছে তরমুজ চাষাবাদের কর্মযজ্ঞ।
শ্যামনগর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার ১৫২ হেক্টর জমি তরমুজ চাষের আওতায় এসেছে। এর মধ্যে উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নে ১০৫ হেক্টর, কাশিমাড়ীতে ২০ হেক্টর, ঈশ্বরীপুরে ২১ হেক্টর, শ্যামনগর সদরে ২ হেক্টর, ভুরুলিয়ায় ১ হেক্টর, রমজাননগরে ১ হেক্টর, মুন্সীগঞ্জে ১ হেক্টর ও আটুলিয়ায় ১ হেক্টর জমিতে জাম্বু গ্লোরী, বিগটপ, ড্রাগন, পাকিজা, বিগবস, ফিল্ড মাস্টার, ওয়ার্ল্ড কুইন, লাল তীর ও টপ ইল্ড জাতের তরমুজ বীজ বপন করা হয়েছে। যেখানে গত মৌসুমে ১০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল।
শ্যামনগরের কাশিমাড়ী, কৈখালী, ধুমঘাট, রমজাননগর, সাপখালী ও শৈলখালী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবুজ তরমুজ গাছ তরুলতার মতো ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়েছে। গাছ পরিচর্চা করে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
সাপখালী গ্রামের তরমুজ চাষি শওকত আলী জানান, তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে পাকিজা জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে তার ক্ষেতে তরমুজ গাছ ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী মাসেই তরমুজ বাজারজাত করা শুরু হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।
খুটিকাটা গ্রামের কৃষক নীলকমল মণ্ডল বলেন, বাজারে যার তরমুজ যত আগে উঠবে, তার লাভ তত বেশি। তাই আগে-ভাগেই তরমুজ চাষ করেছি। তবে এ বছর বীজ ও সারের দাম একটু বেশি। এজন্য খরচও বেশি হচ্ছে। সবমিলিয়ে বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। আবহাওয়া অনুকূলে ও বাজার ভালো থাকলে আয় লাখ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের এখানে লবণাক্ততার কারণে সেচের পানির সংকট প্রকট। পুকুর থেকে জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে।
শুধু শওকত আলী কিংবা নীলকমল মণ্ডল নয়, তরমুজ চাষ করেছেন কামাল হোসেন, আল মাদানী, প্রনয় মণ্ডল, সূর্য মণ্ডল, ইফতেখার আলী, ব্রজেন মণ্ডল, আইয়ুব আলী ও আব্দুল মাজিদের মতো আরও অনেক কৃষক। তাদের চোখে এখন রঙিন স্বপ্ন।
কৃষকদের এই স্বপ্ন পূরণে সার্বক্ষণিক পরামর্শগত সহায়তা দিচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মীরা।
উপজেলার গোবিন্দপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামসুর রহমান জানান, অনেক কৃষকই আগাম তরমুজ চাষ করছেন। তাদের নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এখানে লবণাক্ততার কারণে সেচ সংকট রয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে কয়েকটি মিষ্টি পানির পুকুর খনন করা হয়েছে। এসব পুকুরে মিষ্টি পানির সরবরাহ থাকলে আগামীতে তরমুজের আবাদ আরও বাড়বে।
শ্যামনগর উপজেলা কৃষি অফিসার এসএম এনামুল ইসলাম বলেন, শ্যামনগরের সর্বত্র লবণাক্ততার সমস্যা রয়েছে। তারপরও যেসব এলাকার মাটি বেলে দোআঁশ সেসব এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে ভালো তরমুজ চাষ হচ্ছে। এজন্য তরমুজ চাষের আওতাও বেড়েছে। কৃষি বিভাগ সর্বদা তাদের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৩
আরএ