চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় দুই মাস পর স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের পর বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল চারটা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়।
সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের আম চাষি সুমন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে দুই মাসের বেশি সময় ধরে বৃষ্টি হয়নি। এতে পর্যাপ্ত রস না পেয়ে আম বড় হচ্ছিল না। এছাড়াও প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ ছিল। তাই বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজও আদায়ও করেছিলাম। আল্লাহ আমাদের কথা শুনেছেন অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি নামলো। এখন দ্রুত আম বড় হবে।
শিবগঞ্জ পৌর এলাকার আম চাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, আমের যখন মুকুল ছিল তখন বৃষ্টি হয়েছিল এই অঞ্চলে। তারপরে আর বৃষ্টির দেখা পায়নি। এতে আমের গুটি দ্রুত বড় হচ্ছিল না। তাই ঘন ঘন আমবাগানে সেঁচ দিচ্ছিলাম। কিন্তু সেচ দিয়ে তেমন উপকার পাইনি। আজকে বৃষ্টি হলো এতে খুব দ্রুত আম বড় হবে।
শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট এলাকার আম চাষি সুজা মিয়া বলেন, আমার এ বছর ক্ষিরসাপাত, লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া, আম্রপালি, আশ্বিনাসহ কয়েক জাতের আম গাছ রয়েছে। গাছগুলোতে বিপুল পরিমাণ মুকুল এসেছিল। তবে যে পরিমাণ মুকুল এসেছিল সে পরিমাণ আমের গুটি হয়নি। এতে ফলন নিয়ে শঙ্কায় আছি।
তিনি আরো বলেন, এমনি তো আমের গাছে গুটি কম এসেছে। তারপরও ফের প্রায় দুই মাস থেকে বৃষ্টি হয়নি। এতে আম নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল আমার। তবে আজ বৃষ্টি হয়েছে এখন স্বস্তি লাগছে।
শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, আমের গুটি হওয়ার পর আর বৃষ্টি হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল তীব্র তাপদাহ। এতে আমের গুটি বড় হচ্ছিল না। তাই চাষীদের দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল। তবে আজকের যে স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে। এতে আমরা দুশ্চিন্তামুক্ত।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে বাগানে যে আমের বোঁটা শুকিয়ে গিয়েছিল, সেগুলো ঝরে পড়তে পারে। এছাড়া যদি কোনো এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়, তাহলে শিলার আঘাতে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে শিলা বৃষ্টি তেমন হয়নি। আর এই বৃষ্টি আমার জন্য আশীর্বাদ। এখন থেকে যত ঘন ঘন বৃষ্টি হবে। আমের জন্য তত ভালো।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এবছর যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৩
এএটি