ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

হরতাল-অবরোধের কারণে ক্ষতির মুখে সবজি চাষিরা

জিসান আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২৩
হরতাল-অবরোধের কারণে ক্ষতির মুখে সবজি চাষিরা

চুয়াডাঙ্গা: দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়ছে প্রান্তিক সবজি চাষিদের ওপর। হরতাল-অবরোধসহ নানা অজুহাতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

আবার হরতাল-অবরোধে বেড়েছে পরিবহন ব্যয়। উৎপাদন খরচের সঙ্গে পরিবহন ব্যয় বাড়ায় হতাশ চুয়াডাঙ্গার আগাম সবজি চাষিরা। ফলে নিরুপায় হয়ে মোকামের ব্যাপারীদের কাছে কম দামে সবজি বিক্রি করে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে কৃষকদের।  

জানা গেছে, কার্তিক-অগ্রহায়ণের এই সময়ে আগাম সবজি মাঠ থেকে তুলে তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠায় চাষিরা। কিন্তু এ সময়ে টানা হরতাল-অবরোধ বাধ সেধেছে সবজি পরিবহনে। একদিকে যেমন বেড়েছে পরিবহন ব্যয় অন্যদিকে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকেরা। এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ করা হয়েছে।

কৃষকেরা বলছেন, একটু লাভের আশায় প্রতি বছরের ভাদ্র-আশ্বিন মাস থেকে মাঠে মাঠে শুরু হয় শীতকালীন সবজি উৎপাদনের কাজ। ব্যস্ততা চলে দুই মাস ধরে। শীতের আগেই শীতের এসব সবজি বাজারে তুলতে এ সময়কে টার্গেট করেন তারা। এসব সবজি জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু এবার হরতাল-অবরোধে সবজি পরিবহন কমেছে। আবার বেড়েছে পরিবহন ব্যয়।

সদর উপজেলার গাড়াবাড়িয়া গ্রামের সবজি চাষি মুকুল হোসেন বলেন, এবার বিঘা প্রতি সবজি চাষে খরচ হয়েছে ২০-২৫ হাজার টাকা। এর সঙ্গে এবার যোগ হচ্ছে অতিরিক্ত পরিবহন খরচ। প্রতি গাড়িতে এখন ৮-১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় সবজি বিক্রি করে দাম পাওয়া যাচ্ছে না।

আরেক কৃষক সবুর আলী বলেন, শুধু গাড়াবাড়িয়া গ্রাম থেকেই প্রতিদিন ৮-১০ ট্রাক সবজি লোড হতো। এবার প্রতিদিনি তিন থেকে চার ট্রাক সবজি যাচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। অন্য সবজিগুলো বাইরে যেতে না পেরে হয়তো স্থানীয় বাজারে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে নয়তো ক্ষেতেই পঁচে নষ্ট হচ্ছে।

দামুড়হুদা উপজেলার রামনগর-কলাবাড়ী এলাকার চাষি আব্দুর রহিম বলেন, হরতাল-অবরোধের অজুহাত দেখিয়ে ব্যাপারীরাও আমাদের ঠকাচ্ছেন। কিন্তু এখন সবজি তোলার সময়, তাই বাধ্য হয়েই কম দামে তাদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুর বাজারের সবজির আড়ৎ ঘুরে জানা গেছে, এই মোকামে শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি ও বাঁধাকপির আমদানি ছিল চোখে পড়ার মতো। চাষিদের ফুলকপি বিক্রি করতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩২ টাকা, বাঁধাকপি প্রতি কেজি ১০ থেকে ১৫ টাকা, লাউ ৩১ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ২০ থেকে ২৫ টাকা, দেশি কাঁচামরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও মুলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মোহা. সহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের ৩০ শতাংশ সবজির চাহিদা মেটানো হয় এ জেলা থেকেই। কিন্তু এবার তাতে কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে। যদিও বলা হচ্ছে সবজিবাহী গাড়ি হরতাল-অবরোধমুক্ত। তবুও কিছু শঙ্কা তো থেকেই যায়। আমরাও কৃষকদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।