নীলফামারী: তীব্র খরায় নীলফামারী জেলাসহ আশপাশের এলাকায় আমের গুটি ও কাঁঠালের মুচি ঝরে পড়ছে। এ অবস্থায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
তীব্র খরায় আমের গুটি রক্ষায় প্রতিদিন গাছে পানি স্প্রে করার মাধ্যমে আম গাছ ধুয়ে দেওয়াসহ পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। সেই সঙ্গে কাঁঠালের মুচি বাঁচাতে গাছের গোড়ায় পানি সেচ ও ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষিবিভাগ।
বেশিরভাগ এলাকায় চলছে তাপদাহ। এই পরিস্থিতিতে রংপুরের মিঠাপুকুরের পদাগঞ্জে প্রচণ্ড খরায় ঝরে যাচ্ছে আমের গুটি। ওষুধ স্প্রে করে এবং পানি দিয়েও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ফল। এমন অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় আছেন আম চাষিরা। বৃষ্টি ছাড়া আমের গুটি ঝরা বন্ধের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সম্প্রতি রংপুরের বিখ্যাত হাঁড়িভাঙা আম স্বীকৃতি পেয়েছে জিআই পণ্য হিসেবে। রংপুরে বাণিজ্যিকভাবে অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে আমের বাজারে। গত কয়েক বছর ধরে প্রতি বছর রংপুরে কেনাবেচা হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ কোটি টাকার আম। আর এসব আম উত্তরবঙ্গ থেকে চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
কৃষকেরা জানান, চলতি বছরে আমের মুকুল আসার সময় হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় কালচে হয়ে বেশির ভাগ মুকুলই নষ্ট হয়েছে। অবশিষ্ট মুকুল থেকে যা আমের গুটি হয়েছে, তাও চলতি বৈশাখ মাসে টানা খরা, তাপদাহ ও পোকার আক্রমণে ঝরে পড়ছে। সেচ ও স্প্রে দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
এদিকে তীব্র খরায় আমের গুটি রক্ষায় প্রতিদিন গাছে পানি স্প্রে করার মাধ্যমে আমগাছ ধুয়ে দেওয়াসহ পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমের মুকুল আসার সময় পরপর কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় মুকুলে সমস্যা হয়েছিল। এখন সারা দেশেই তাপদাহ চলছে। এ সময় প্রচুর পরিমাণে সেচ দিতে হবে। আমরা দেখেছি, যেসব চাষি নিয়মিত সেচ দিচ্ছেন, তাদের আমের গুটি পড়ার সমস্যা হচ্ছে না। যারা একদিন সেচ দিচ্ছেন আর এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ দিচ্ছেন না, তাদের এই সমস্যা হচ্ছে।
আমের পোকা রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, আমের বাগানে পোকা দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। সঠিক ওষুধ ও পানির অনুপাত ঠিক রাখলে পোকা দমন করা সম্ভব। মোট কথা, আম চাষিদের এ সময় বাড়তি যত্ন নিতে হবে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছর রংপুর জেলায় ৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাঁড়িভাঙ্গা আমের চাষাবাদ করা হয়েছে ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ হাজার মেট্রিক টনের বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০২৪
আরএ