ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

বস্তায় আদা চাষে সফল সাটুরিয়ার কৃষক

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
বস্তায় আদা চাষে সফল সাটুরিয়ার কৃষক

মানিকগঞ্জ: গৃহিনীর সুস্বাদু রান্নায় এক অনন্য মসলার নাম আদা। আদা ছাড়া রান্নার সঠিক সাদ বা ঘ্রাণ আসে না।

আর সেই আদা বাণিজ্যিকভাবে বস্তা পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়ায়।

এই পদ্ধতিতে একদিকে যেমন মাটিবাহীত রোগের আক্রমণ অনেক কমে যায়, অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে বস্তা অন্য জায়গায় সরিয়েও নিয়ে যাওয়া যায়। কৃষি খাতে আধুনিকতার প্রসার ঘটায় বর্তমান সময়ে বাড়ির উঠান কিংবা পতিত জমিতে বস্তায় আদা চাষে ঝুঁকছে চাষিরা। অল্প খরচ আর অধিক লাভ হওয়ায় সাথী ফসল হিসেবে বস্তায় আদা চাষ করছেন চাষিরা।  

সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ২০ হাজার ২২০টি বস্তায় ৫৫ হেক্টর জমিতে আদার চাষ হয়েছে। বিগত বছরে চার হাজার ২৩০টি বস্তায় ৫০ হেক্টর জমিতে আদার চাষ হয়েছিল।

জানা যায়, বস্তায় আদা চাষে প্রথম দিকে মাটি, বালু, গোবর সার ও দানাদার কীটনাশক নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হয়। তবে আদার কন্দ লাগানোর আগে ছত্রাকনাশক এক লিটার পানিতে দিয়ে শোধন করে নিতে হবে। শোধনের পর কন্দ গুলো আধা ঘণ্টা ছায়ায় রেখে শুকিয়ে নিতে হয়। পরে বালুভর্তি টবে তিন টুকরো অঙ্কুরিত আদা পুঁতে দিবে হবে। বাড়ির উঠান বা আশপাশের ফাঁকা জায়গা অথবা ছাদে যেখানে খুশি এসব বস্তা রাখা যায়। অনেকেই আবার সাথী ফসল হিসেবেও চাষ করে থাকেন। ২২ থেকে ২৫ দিন পর গাছ বের হবে। প্রতি বস্তায় আদা রোপণ থেকে পরিপক্ব হতে ৩০ থেকে ৪০ টাকার মতো খরচ হয়।

উপজেলার ফুকুরহাটি ইউনিয়নের আদা চাষি আবুল কালাম বলেন,  চলতি বছর আমি এক হাজার বস্তায় আদার আবাদ করেছি। বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত কারণ অতি বৃষ্টি, খড়াসহ যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই আদার ক্ষতি করতে পারে না। দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যায়। এছাড়া অল্প খরচেই অধিক আদা চাষ করা সম্ভব।  

দরগ্রাম এলাকার পশ্চিম কুষ্টিয়ার সেলিম হোসেন নামে এক চাষি বলেন, এ বছর আমি ৮৫০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতি বস্তায় একটি করে বীজ রোপণ করেছি এবং চাষে খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা প্রতি বস্তায়। আশানুরূপ ফলন হয়েছে, আমাদের ধারণা প্রতি বস্তা থেকে ২ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত আদা পাবো। অল্প খরচে অধিক লাভ হয়েছে। সামনের বছরে আরও বৃহত্তর পরিসরে আদা চাষ করবো।

সাটুরিয়া কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, সাটুরিয়ায় বস্তা পদ্ধতি অবলম্বন করে বেশ কিছু কৃষক আদার আবাদ করছেন। এই পদ্ধতিতে আদার মাটিবাহী রোগের আক্রমণ কম হয় এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এর কোনো ক্ষতি করতে পারে না। বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষে আলাদা জমির পরিচর্যার প্রয়োজন নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।