ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আখ চাষিদের স্বপ্ন তলিয়ে গেল বানের জলে

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪
আখ চাষিদের স্বপ্ন তলিয়ে গেল বানের জলে

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের কৃষক নজির আহমেদ ৪২ শতাংশ জমিতে আখ (ইক্ষু) চাখ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় তিন লাখ টাকা।

আখের ফলনও ভালো হয়েছে। রিষ্ট-পুষ্ট ফসলে খরচ বাদ দিয়ে লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখেন তিনি। কিন্তু লাভ তো দূরের কথা, পুরো তিন লাখ টাকা লোকসান হয়েছে তার। আর পরিশ্রম গেল বৃথা, জলে তলিয়ে গেল তার স্বপ্ন।

নজির আহমেদের আখ ক্ষেতটি বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। আখ মরে না গেলেও দীর্ঘদিন পানিতে থাকায় দুর্গন্ধ হয়ে গেছে। যা খাবারের অনুপযোগী।  

মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া এবং মোহাম্মদ নগর গ্রামের বিস্তীর্ণ জমিতে আখ চাষ হয়। এতে বেশ লাভবান হন কৃষকরা। কিন্তু এবার লাভের বদলে অথৈ জলের তলে ডুবে রইল তাদের ক্ষেত। এতে ওই এলাকার অন্তত ২০ জন চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সহায় সম্বল হারিয়েছেন অনেকেই।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে যাদৈয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, আখ চাষি নজির আহমেদ সাঁতার কেটে ক্ষেত থেকে আখ তুলছেন। কলাগাছের ভেলায় চাপিয়ে সংগৃহীত আখগুলো রাস্তার পাশে নিয়ে আসেন। এ সময় আখের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই চাষি।

বাংলানিউজকে বলেন, আল্লাহ তায়ালা দিছেন, আবার নিয়েও গেছেন। আখের ফলন ভালো হয়েছে। একেকটা আখ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু এ আখ এখন কেউ খাবে না। পানিপচা গন্ধ ছড়াচ্ছে। বন্যা আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ৪২ শতাংশ জমিতে তিন লাখ টাকা খরচ করে চাষাবাদ করেছি। যে ফলন হয়েছে, চার লাখ টাকা বিক্রি করতে পারতাম। কিন্তু সব পানিতে পচে গেছে। আমার মতো এ এলাকার অনেক আখ চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

একই এলাকার আখ চাষি সফি উল্যা জানান, আখ চাষে তার দুই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এক টাকার আখও বিক্রি করতে পারেননি। বন্যার পানি আখ ক্ষেত ডুবিয়ে দিয়েছে।

যাদৈয়া এবং মোহাম্মদ নগর গ্রামের আখ চাষি আবু তাহের, আহম্মেদ উল্যা ও কালু মিয়ার চিত্র একই। এবার তারা আখ চাষ করে বন্যার কারণে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তাদের এলাকার সব আখ ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এলাকার অন্তত ২০ জন চাষি আখ চাষাবাদ করেন। প্রতি মৌসুমে চাষাবাদ খরচ বাদ দিয়ে তারা বেশ লাভবান হতেন। তা দিয়ে সংসার চলতো। কিন্তু বন্যার কবলে পড়ে আখ চাষিরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তারা তাদের চাষাবাদের সম্বল হারিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।