বুধবার (২২ মার্চ) সকালে সিরাজগঞ্জ শহরের বড় বাজার, স্টেশন বাজার ও কালিবাড়ী বাজার সরেজমিনে ঘুরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
স্থানীয় চাল ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত এক মাসের ব্যবধানে দাম বেড়ে মিনিকেট এখন প্রতি কেজি ৩৬ টাকা থেকে ৪২ টাকা, পাইজাম ৪৬ টাকা থেকে ৫২ টাকা, মিনিকেট ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তেলকুপি গ্রামের দিনমজুর জাফর আলী, ভাঙ্গাবাড়ী গ্রামের সাইফুল ইসলাম, শ্রমিক রবিউল, রেলওয়ে কলোনির গণেশ দাসসহ ক্রেতারা জানান, প্রতি সপ্তাহে চালের দাম বাড়ছে। এভাবে গত এক মাসের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৫/৬ টাকা হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কয়েকশ’ টাকা খরচ বেড়ে গেছে সংসারের।
শহরের এসএস রোডের বাসিন্দা লক্ষ্মী রানী বাংলানিউজকে বলেন, আমার পরিবারে সপ্তাহে ১৫ কেজি চাল লাগে। চালের মূল্য বাড়ায় সপ্তাহে ৯০ টাকা বাড়তি ব্যয় হচ্ছে। কিন্তু আয় না বাড়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
শিয়ালকোল ইউনিয়নের শিবনাথপুর গ্রামের তাঁত শ্রমিক মোহাম্মদ আলী, ইসমাইল হোসেনসহ অনেকেই বাংলানিউজকে জানান, চালের বাড়তি মূল্যের কারণে সংসার খরচ বেড়ে গেছে।
বড় বাজারের ক্ষুদ্র চাল ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পাইকারী বাজারে চালের দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ বিএড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. মহির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, গত ১৫ মাস ধরে বেতন পাই না। তারপরও চালের এই মূল্যবৃদ্ধি মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠেছে।
আলহাজ ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আলহাজ আলী বাংলানিউজকে জানান, চাতালগুলোতে চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে আমরা পাইকারি দরও বাড়িয়েছি।
চাতাল ব্যবসায়ী মোস্তাক আলী ও আবু তাহের বাংলানিউজকে বলেন, দুই মাসের ব্যবধানে প্রতি মণ ধানের দাম একশ’ থেকে দেড়শ’ টাকা বেড়েছে। গত জানুয়ারি মাসে যে ধান ঠিল ৮৬০ টাকা মণ, সেই ধান বর্তমানে কিনতে হচ্ছে ৯৮৫ টাকায়। এ কারণে চালের দামও বাড়াতে হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জুরান আলী বাংলানিউজকে বলেন, মৌসুম শেষ হয়ে গেলেও সরকার এখনো চাল কিনছে। অপরদিকে ধানের মূল্যও ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। এ কারণে চাল ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে মূল্য বেশি নিচ্ছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ মোঃ জহরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বোরো মৌসুম শুরুর আগে কৃষক ও চাতাল মালিকদের কাছে ধানের সংকট থাকে। ধানের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়তে পারে। অপরদিকে সরকার এখনো চাল কিনছে। ফলে চাহিদার তুলনায় যোগান কম থাকায় চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সোমবার জেলা বাজার নিয়ন্ত্রণ কমিটির এক সভায় চালের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মূল্য বৃদ্ধির কারণ তদন্তে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জেলা মার্কেটিং অফিসার ও চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
জেডএম/