কৃষকরা জানান, নেক ব্লাস্ট ছত্রাক জাতীয় একটি রোগ। যা এক খেত থেকে আর এক খেতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
এ রোগে আক্রান্ত হলে ধানের ৭০ ভাগ পর্যন্ত ক্ষতি হয়ে যায়। ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত ধান গাছের পাতায় প্রথমত চোখের মত দাগ হয়। পরে গিট, গোড়া ও দানায় আক্রান্ত করে। পাতার রং সাদা হয়ে যায় ও ভিজা দাগ ধরে। ধানের শীষ চিটা হয়ে যায় এবং ধান গাছ মরে যায়।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, ধান খেতে প্রচুর পানি ধরে রাখার পাশাপাশি ধানের শীষ বের হওয়ার আগেই জমিতে ফিলিয়া, এমিস্টার টপ, ট্রপার, নাটিভো জাতীয় তরল কীটনাশক ব্যবহার করলে ধান খেত ব্লাস্ট রোগ থেকে রক্ষা করা অনেকটা সম্ভব।
ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা কৃষকদের সতর্ক বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন। তবে কৃষকদের অভিযোগ এসব কীটনাশক ব্যবহার করেও ধান খেত রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।
হাতিবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী গ্রামের আলতাব হোসেন জানান, তার ২৮ জাতের ধানের শীষ মরে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ওষুধ দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ হয়নি।
সানিয়াজান ইউনিয়নের চর এলাকার কৃষক আজিজুল ইসলাম জানান, তার হাইব্রিড জাতের ২ বিঘা ইরি-বোরো খেতে নেক ব্লাস্ট আক্রমণের ভয়ে কৃষি বিভাগের পরামর্শে ওষুধ দিয়ে কিছুটা রক্ষা পেলেও ২৫ শতাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের কৃষক সুলতান হোসেন জানান, ২৮ জাতের ধান চাষ করেছেন তিনি। সেই খেতে হঠাৎ ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ ঘটে। কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৪ হাজার ৭৬৫ হেক্টর ইরি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ২ হাজার ৫শ’ হেক্টর। একই মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫১ হাজার ৭৬৫ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ৫০ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে।
লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক বিদু ভূষণ রায় বলেন, নেক ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে চাষিদের ছত্রাক জাতীয় ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আমরা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শনসহ কৃষকদের লিফলেট বিতরণ করছি, ভয়ের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
আরএ