নীলফামারীর বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ জমিতেও এখন নানা জাতের চিকন ধান সুগন্ধি ছড়াচ্ছে। বেশি লাভ পাওয়ায় এ ধানগুলোকে বেছে নিয়েছেন কৃষকেরা।
জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুর উপজেলার কৃষকরা মূলত: বিভিন্ন জাতের স্বর্ণা, পায়জাম, বিআর-২৮, বিআর-২৯ ও বিআর-১৬ জাতের ধান আবাদ করে থাকেন। কালোজিরা ও ব্রি ধান-৩৪ মৌসুমে লাগানো হলেও দেরিতে কাটা-মাড়াই করতে হয়।
বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে বেশি লাভের আশায় চিকন ধানের আবাদে ঝুঁকে পড়ছেন তারা। বিশেষ করে কালোজিরা ও ব্রি ধান-৩৪ আবাদে বেশি মনোযোগী হয়েছেন।
ফলে পানিশাইল, পানাতি, পাখড়ি, সীলকোমর নামের ধানগুলো এ জনপদ থেকে হারিয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ কালোজিরার আবাদ সুগন্ধ ছড়াচ্ছে। মানুষ ব্রি ধান-৩৪ কে বেগুন বিচি বলে জানেন ও চেনেন। কারণ, এ ধানের চাল অনেকটা বেগুনের বিচির মতো ছোট। কালোজিরার চেয়ে সুগন্ধি কিছুটা কম।
নীলফামারী সদরের কৃষক কাইলঠা মামুদ জানান, ‘গত বছর বেগুন বিচি ধান প্রতি বস্তা ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এবার আরও বেশি দাম পাবো বলে আশা করছি’।
সৈয়দপুরের কৃষক আবেদ সরকার বলেন, ‘প্রতি বছর এ দু’টি ধানের আবাদ বাড়াচ্ছি। কারণ, এগুলোর দাম ও চাহিদা থাকে সব সময়, ফলনও ভালো হয়’।
‘বিশেষ করে নতুন জামাই বাড়িতে এলে এসব ধানের চালের পোলাও চাইই, চাই। অনেক কৃষক পরিবার জামাইকে বেজাড় করতে চান না বলেই ধানটির আবাদ করে থাকেন’।
‘আবার বাঙালির নানা উৎসবেও এসব ধানের চালের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এসব ধানে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। সে কারণে সতর্ক না থাকলে সর্বনাশ অনিবার্য’ বলেও মন্তব্য করেন কৃষক আবেদ সরকার।
কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় সুগন্ধি ধানের আবাদ প্রতি বছর বাড়ছে। কৃষকরা ধান আবাদে আর লোকসান গুণতে চান না বলে বিকল্প ধান সুগন্ধির চাষে ঝুঁকি পড়েছেন। ফলন ও দামে লাভবানও হচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৭
এএসআর