হবিগঞ্জের বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, লাখাই ও নবীগঞ্জের হাওর ঘুরে দেখা যায়, বাতাসের সঙ্গে ধুল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্নের সবুজ ধানগাছ। হাওরগুলোতে দৃষ্টির সীমানা পর্যন্ত সবুজের সমারোহ।
জেলা উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় এবার বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ১৫ হাজার ৭৪ হেক্টর জমি। কিন্তু এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এক লাখ ২১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমি চাষ করা হয়েছে। বোরো চাষে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অনেকটা সাফল্যের। কেননা বোরো চাষের শুরু থেকেই নানা প্রতিকূলতার সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত হাওর পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ধানের ফলন ফালো হয়েছে। তবে হাইব্রিডের চেয়ে বৃ-ধান-২৯’র ফলন আরো ভালো হয়েছে। যা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এমন ফলন হয়নি।
‘বোরো চাষ অর্থাৎ শীতকালের শুরু থেকেই কৃষি বিভাগ কৃষকদের নিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। ধান ঘরে তুলার আগ পর্যন্ত জেলার ৮ উপজেলার কৃষকদের নিয়ে আমরা মাঠে আছি’ এমনটি উল্লেখ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।
এদিকে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয় আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হিলালপুর গ্রামের কৃষক ওয়ারিশ মিয়ার। তিনি বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অন্তত ১৫ দিন আগেই বোরো ধানের বীজতলা তৈরি করেছিলাম। সে অনুযায়ী ধান রোপনসহ সব ধরনের কাজই আগে আগে করেছি। এখন অন্যান্য বছরের চেয়ে প্রায় দুই সপ্তাহ আগেই ধান কাটতে পারব বলে আশা করছি। এছাড়া ভালো ফলন পাব বলেও হাওরের ধান গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে। বাকিটা ওপরওয়ালাই জানেন। তিনি আরো বলেন, আমার অভিজ্ঞতার আলোকে ৩০ বছরের তুলনায় এবার বেশি ফলন হয়েছে। তবে এবার হাইব্রিডের চেয়ে দেশীয় জাতের ধান বেশি চাষ করা হয়েছে। অন্যান্য বছর প্রতি ২৮ শতক জমিতে ১৫ থেকে ১৮ মণ ধান উঠিয়ে থাকলেও এবার প্রতি ২৮ শতকে ২০ থেকে ২২ মণ ফলন হতে পারে।
বানিয়াচং উপজেলার জাতুকর্ণপাড়া এলাকার কৃষক তৌফিক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এ পর্যন্ত কোনো ধরনের পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ছাড়াই ধানের পরিচর্যা চলছে। সামনের দিনগুলোতে যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি ফলন হবে।
আজমিরীগঞ্জের জলসুখা গ্রামের কৃষক আশিক মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান বাজারে বৃ-ধান-২৯’র বাজার দর এক হাজার টাকা মণ। ভালো ফলনের সঙ্গে সঙ্গে বোরো মৌসুমে যেনো ধানের ভালো দর পাওয়া যায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ দাবি করছি।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৮
টিএ