ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে নেত্রকোনার ধান মাড়াই কল 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৮
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে নেত্রকোনার ধান মাড়াই কল  দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যচ্ছে নেত্রকোনার ধান মাড়াই কল। ছবি: বাংলানিউজ

নেত্রকোনা: গত মৌসুমে কয়েক দফা বন্যার কবলে পড়ে নেত্রকোনার হাওরের মতো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ফসল হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন কৃষক। এর প্রভাবে শুধু কৃষকই না ভোগান্তির শিকার হয়েছেন গোটা দেশের মানুষ।

ধারদেনা ও সরকারি সহায়তা নিয়ে কোনো রকম নিদান কাল মোকাবেলা করেছেন দুর্গতরা। মনে ক্ষতির ভয় আর আতংক থাকলেও ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় চলতি বছর ফের ফসল বুনেছেন কৃষকরা।

মাঠের পর মাঠ জুড়ে কৃষকের হাড়ভাঙা পরিশ্রমে বোনা স্বপ্ন- সোনালী ফসল দোল খাচ্ছে।  

এখন চলছে ধান কাটা উৎসব। একাধিক কৃষক জানান, গতবারের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতির কথা মাথায় রেখে এবার একটু আগেভাগেই ফসল কাটা শুরু করেছেন তারা।

এজন্য চাহিদা বেড়েছে ধান মাড়াই কলের। কৃষক থেকে শুরু করে গেরস্ত, প্রত্যেকেই মারাই কল সংগ্রহ করতে কারখানায় দৌড়ঝাঁপ করছেন।

নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কের শ্যামগঞ্জ বাজারের কাছে ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ। সেখানে দিন-রাত তৈরি হচ্ছে ধান মাড়াই কল। প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাক ভালোমানের মাড়াই কল বিক্রি করে ব্যবসায় সুনাম অর্জন করেছেন। এখন তার কারখানায় তৈরি মাড়াই কল পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

ধান মাড়াই কল।  ছবি: বাংলানিউজগত বছর বন্যার কারণে ধান তলিয়ে যাওয়ায় চাহিদা ছিলো না আব্দুর রাজ্জাকের মাড়াই কলের। ফলে তার ব্যবসায় নেমেছিল ধস। তবে এ বছর সে ক্ষতিপূরণ হবে বলেই আশা করছেন তিনি।

এরই মধ্যে ওয়ার্কশপে হাজার খানেক মাড়াই কল প্রস্তুত রয়েছে তার। দিনরাত চলছে আরও মাড়াই কল তৈরির কাজ। বিভিন্ন পরিবহন বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এরই মধ্যে প্রায় শতাধিক মাড়াই কল দেশের বিভিন্ন জেলার ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

ওয়ার্কশপে তিনটি সাইজে নেটিং সিস্টেম ও সাধারণ (নেটিং ছাড়া) দুই ধরনের মাড়াই কল তৈরি করছেন তিনি।  

আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে জানান, নেটিং সিস্টেমের কলের দাম বেশি হলেও সুবিধাও বেশি। সাধারণ মাড়াই কলে গাছ থেকে শুধু ধানটুকু আলাদা হয়। আর নেটিংয়ে একই সঙ্গে ধান আলাদা হয়, আবার ময়লাও আলাদা হয়। এতে সাশ্রয় হয় সময়, শ্রম আর অর্থ। প্রকারভেদে একেকটি কলের দাম ২৩ হাজার থেকে ৬৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। তিন চাকা বিশিষ্ট হওয়ায় সহজেই স্থানান্তর করা যায় এ মেশিন। চার/পাঁচজন শ্রমিকের একটি মেশিন তৈরিতে প্রায় সপ্তাহ সময় ব্যয় হয়।

চলতি মৌসুমে মাড়াই কল তৈরিতে রোজগারের উৎস খুঁজে পেয়েছেন শ্যামগঞ্জ বাজার, গোহালাকান্দা এলাকাসহ বিভিন্ন গ্রামের কর্মহীন অনেকে। নিয়মিত শ্রমিক ছাড়াও কলেজছাত্ররাও আব্দুর রাজ্জাকের ওয়ার্কশপে মাড়াই কল তৈরির কাজ করছেন প্রতিদিন।

শ্যামগঞ্জ হাফিজ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজের মানবিক শাখার ছাত্র মো. সাদেকুল ইসলাম তাদেরই একজন।

তিনি বলেন, ওয়ার্কশপে এখন দম ফেলার ফুরসত নেই। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় আমি কাজের সুযোগ পেয়েছি। প্রতিদিন ৬০/৭০ জন শ্রমিক বিভিন্ন মজুরিতে এই মাড়াই কল তৈরির ওয়ার্কশপে কাজ করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০১৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৮
এসআই/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।