শুধু কি ফলের গাছ-পদ্ম, শাপলা থেকে শুরু করে হাসনাহেনা, রজনীগন্ধা, বেলী কত রকমের ফুল গাছ রয়েছে। আছে নানা ধরনের শোভাবর্ধনকারী গাছও।
হাজার হাজার প্রজাতির এসব গাছ নিয়ে এক বিশাল সমারোহ রাজধানীর আগারগাঁওয়ের 'বাণিজ্যমেলা' মাঠে। এখানেই ২৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে জাতীয় বৃক্ষমেলা।
সড়ক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই টিভি সিরিয়ালে কল্পকাহিনীর মতো মনে হবে হঠাৎ অন্য জগতে এসে পড়েছেন। হ্যাঁ, একদম তাই।
চোখের পুরোটা সীমানা জুড়ে কেবল ঘন সবুজ আর সবুজ। মাছে নানা রঙয়ের ঝুলন্ত ফল। এক নৈস্বর্গিক পরিবেশ। একেবারে শান্ত স্নিগ্ধ। ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় আছে অন্য যে কোনো মেলার মতোই। শনিবার (২১ জুলাই) ছুটির দিন বলে কিছুটা বেশিই ভিড়। তবে একদম কোলাহল নেই।
রঙতুলি ও রঙধনুকে সঙ্গে করে ঘুরতে এসেছেন মঈনুল হক চৌধুরী দম্পতি। নিজেরা জেনে নিচ্ছেন নানা প্রজাতির গাছের পরিচিতি। সেইসঙ্গে বইয়ের পাতায় রঙতুলির দেখা গাছের জীবন্তটাও দেখার সুযোগ মিলছে। পুরো পরিবেশটাই প্রশান্তির আয়োজন। আর বিস্ময় তো মানুষের আনন্দের বড় উপাদান। এখানে এসে আবিস্কার হচ্ছে লোকমুখে শোনা গাছগুলোর। এটাও আবিস্কারই বলা চলে।
রঙতুলিকে দেখা গেলো চৌবাচ্চায় আমাজন লিলি, পদ্ম, শাপলা দেখতে ব্যস্ত। যা সে ছবিতেই দেখেছে। সেখানে তার বাবা কিছু ফটো নিলেন। বৃক্ষমেলা তাই শুধু মনের খোরাকই নয়, জ্ঞানের আঁধারও হয়ে উঠেছে।
ইউনুস আফসারীকে কয়েকটি শোভাবর্ধনকারী বাঁশ গাছের শোপিস নিতে দেখা গেল। জানালেন প্রতিটির দাম পড়েছে এক হাজার টাকা। তবে ছোটগুলো ৭শ’ টাকায় মিলছে।
তিনি বাংলানিউজ বলেন, এই একটি মেলায় প্রতি বছর আসি। এ মেলার সৌন্দর্য, তাৎপর্য অনেক। গাছ দেখে, কিনে, ঘুরে সবটাতেই আনন্দ। কোনো রকমের কোলাহল নেই। ভেতরে ঢুকলেই ভিন্ন জগতে এসেছি বলে মনে হয়। ঢাকা আছি বলে তো মনে হয়ই না।
লুৎফা নাহার তার বোনের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে গাছ কিনছেন। কিছু ক্যাকটাসও নেবেন বলে জানালেন। মেলায় ৫শ’ থেকে থেকে ৩ হাজার টাকায় শোভাবর্ধনকারী গাছ পাওয়া যাচ্ছে। বনসাঁই আছে। দাম পড়ছে পাঁচ হাজার টাকা থেকে লাখ টাকার ওপরে।
এছাড়া বিভিন্ন উচ্চ ফলনশীল ফলের গাছও বেশ বিক্রি হচ্ছে। ফ্রি হিসেবে মিলছে চাষ পদ্ধতি। এক্ষেত্রে আমগাছের চাহিদাই বেশি লক্ষ করা গেছে। দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে টবের আম গাছ।
কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারির সেলসম্যান হারুন জানালেন, টবের গাছগুলোতে পানি ছাড়া আর কিছু দিতে হবে না। বারমাসি আমের গাছও আছে। আম, স্ট্রবেরি, কুল, জামরুলসহ নানা ফলের চাষাবাদ পদ্ধতিও বলে দেওয়া হচ্ছে। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহ ভালো। বিক্রিও ভালো হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
ইইউডি/আরআর