ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

আমন নিয়ে কৃষকের বুকভরা স্বপ্ন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ৬, ২০১৮
আমন নিয়ে কৃষকের বুকভরা স্বপ্ন আমন ধানের ক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ

লক্ষ্মীপুর: এখন আমন মৌসুম। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। বাতাসে দুলছে ধান গাছ। ঝুলছে ধানের ছড়া। যতো দূর চোখ যায়, কেবলই আমনের ক্ষেত আর সারি সারি ধান গাছ। প্রকৃতি যেন ধান দিয়ে সেজেছে। এ সময়ের এমন অপরুপ সৌন্দর্য্য মুগ্ধ হবার। 

কার্তিক মাসের আর ক’টা দিন বাকি। এরমধ্যেই পাকা ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ।

অগ্রহায়ণ মাসে আমন কাটতে শুরু করবে কৃষক। গোলায় উঠাবে সোনার ফসল; এমনই প্রত্যাশায় স্বপ্ন বুনছেন আমন চাষিরা।

লক্ষ্মীপুর উপকূলীয় জেলা। এখানে প্রচুর ধানের আবাদ হয়। চলতি মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন আশা করা যায়।

সোমবার (৫ অক্টোবর) লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ও কমলনগর উপজেলার চর জাঙ্গালীয়া গ্রাম ঘুরে কৃষকদের কাছ থেকে আমন চাষের খোঁজ-খবর নেওয়া হয়। ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা শেষ মুহূর্তের যত্নে ব্যস্ত। পরিচর্যায় করছেন ফসলের।  

এর আগে জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে রোপা আমনের জন্য বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। বীজ বুনেছেন কৃষকরা। চারা বড় হওয়ার পর বীজতলা থেকে সংগ্রহ করে রোপন করেন জমিতে।

রোপা আমন বৃষ্টি নির্ভর; এ মৌসুমে বৃষ্টির ওপর ভরসা করে কৃষকরা আমনের চাষ করেন। কিন্তু সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে অক্টোবরের ৯ তারিখ পর্যন্ত দুই সপ্তাহের বেশি সময় বৃষ্টি হয়নি। জমির পানি শুকিয়ে যায়। এ সময় বিপাকে পড়েন কৃষকরা। কেউ কেউ পাম্প দিয়ে পানি সংগ্রহ করে ফসল রক্ষার চেষ্টা করেন। ১০ ও ১১ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়। এতে আমন ক্ষেতে পানি জমে কৃষকদের কাঙ্ক্ষিত পানির প্রত্যাশা পূরণ হয়। সজীব-সতেজ হয়ে উঠে ফসলের মাঠ। স্বস্তি আসে কৃষকের। জেলার চরাঞ্চলের আমন ধানের বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা করছেন কৃষকরা। ফসলকে ঘিরে এখাকার চাষিদের বুকভরা স্বপ্ন।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর উভূতি গ্রামের কৃষক আবুল খায়ের বলেন, মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে পানির অভাব দেখা দেয়। এ সময় হতাশ হয়ে পড়েছি। পরে বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের রক্ষা হয়েছে। পোকা-মাকড় যাতে আক্রমণ করতে না পারে সেদিকে নজর ছিলো। দুই সপ্তাহের মধ্যে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবো আশা করছি।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের ৫ উপজেলায় ৭২ হাজার ৫৯৭ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এদিকে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জিত হয়েছে ৭৭ হাজার ৮৯০ হেক্টর।

এরমধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা উফশী জাতের ১৯ হাজার ২৩০ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ২ হাজার ১০০ হেক্টর, হাইব্রিড ৫০ হেক্টর। রায়পুরে হাইব্রিড ১ হাজার হেক্টর, উফশী ৯ হাজার, স্থানীয় ১৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে।  

এছাড়া রামগঞ্জে ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে উফশী ধানের আবাদ করে কৃষকরা। কমলনগরে উফশী ২২ হাজার হেক্টর, স্থানীয় জাতের ১ হাজার ৫০০ হেক্টর ও কমলনগরে ১৮ হাজর ২৬০ হেক্টরে উফশী এবং ১ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খান বলেন, চলতি মৌসুমে রোপা আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। প্রত্যাশিত ফসল উৎপাদনে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারাসহ কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কাঙ্ক্ষিত ফসল পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৮
এসআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।