ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

রেগুলেটর বিকল, পানির অভাবে বোরো আবাদ ব্যাহত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৯
রেগুলেটর বিকল, পানির অভাবে বোরো আবাদ ব্যাহত রেগুলেটর বিকল হয়ে ভোগান্তিতে চাষিরা

লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাটের মেঘনা নদী সংলগ্ন রহমতখালী খালের ওপর নেভিগেশন লকসহ ১৪ ভেন্টের দুটি রেগুলেটর বিকল হয়ে পড়েছে। রেগুলেটর দুটির বেশিরভাগ গেট বন্ধ থাকায় নদী থেকে পানি খালে প্রবেশ করতে পারছে না। পর্যাপ্ত পানির অভাবে রোপণ করা যাচ্ছে না ধানের চারা। এতে হাজারো কৃষক পড়েছেন বিপাকে। এমন পরিস্থিতে চলতি মৌসুমের বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, রেগুলেটর দুটির মোট ২৮টি গেট আছে। মূল রেগুলেটরের ১৪ গেটের মধ্যে দুটি ছাড়া বাকি ১২টি বিকল হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে।

পুরনো রেগুলেটরের ১৪টি গেটই বন্ধ। এর মধ্যে তিনটি ভেঙে গেছে। জোয়ারের সময় গেট খুলতে না পারায় রহমতখালী খালে পানি ঢুকতে পারে না। ভাঙা গেট দিয়ে কিছু পানি প্রবেশ করলেও ভাটার টানে ফের নদীতে চলে যায়। ভরা মৌসুমে পানির অভাবে জমিতে লাঙল দিতে পারছেন না কৃষকরা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের হাজারো কৃষক। ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন।

বোরো মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের কৃষকরা মেঘনা নদীর জোয়ারের পানির ওপর ভরসা করে আবাদ করেন। বিগত বছরগুলোর মৌসুমের এমন সময় পানির প্রয়োজন হলে রেগুলেটরের গেটগুলো খুলে দেওয়া হতো। মেঘনার জোয়ারের পানি রহমতখালী খাল হয়ে আশেপাশের বিভিন্ন খালে ঢুকতো। এসব পানি খালে খালে পৌঁছাত কৃষকের দ্বারপ্রান্তে। পর্যাপ্ত পানিপ্রাপ্তির পর গেট বন্ধ করে দেওয়া হতো। কিন্তু চলতি মৌসুমে রেগুলেটরের বেশিরভাগ গেট বন্ধ থাকায় পানি প্রবেশ করতে পারছে না; যে কারণে কৃষক এখন বিপাকে।

কমলনগর উপজেলার উত্তর চর লরেন্সের তোরাবঞ্জ এলাকা ও পার্শ্ববর্তী সদর উপজেলার ভবনীগঞ্জের চর উভুতি ঘুরে দেখা গেছে, খালে পানি নেই। বোরো রোপণ করতে পারছেন না বেশিরভাগ কৃষক। কেউ কেউ বিকল্প উপায়ে পুকুর-দীঘি থেকে পানি নিয়ে চারা রোপণের চেষ্টা করছেন।
রেগুলেটর বিকল হয়ে ভোগান্তিতে চাষিরাকৃষকরা জানান, বোরো মৌসুমে অমাবশ্যা ও পূর্ণিমার আগে-পরে চার থেকে পাঁচদিন জোয়ার আসে। ওই জোয়ারের পানি খালে ঢুকলে সে পানি পাম্প দিয়ে ক্ষেতে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রায় সবগুলো গেট বন্ধ থাকায় পানি খালে পৌঁছায় না।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার টুমচর, কালির চর, চর উভুতি, ভবানীগঞ্জ, জকসিন, মিরিকপুর, উত্তর জয়পুর, দত্তপাড়া, তেওয়ারীগঞ্জ, কুশাখালীসহ জেলার পূর্বাঞ্চল এবং কমলনগর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের বেশিরভাগ কৃষক পানির অভাবে বোরো আবাদ করতে পারছেন না।

উত্তর লরেন্স কৃষি উন্নয়ন সমিতির সভাপতি ও সেচ মালিক আবদুল গণি জানান, পানি না পেয়ে কৃষকরা হতাশ। পানির অভাব না মিটলে কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়বেন।

মজুচৌধুরীরহাট রেগুলেটরের গেইট অপারেটর মো. ফয়েজ জানান, দুটি রেগুলেটরের ২৮টি গেটের মধ্যে ৫টি ভেঙে গেছে। বাকি ২৩টি গেটের ‍ওঠা-নামার তার ছিঁড়ে গেছে; যে কারণে গেটগুলো খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গেট খুলতে না পারায় ধান চাষে কৃষকরা পানি পাচ্ছে না। বিষয়টি কতৃপক্ষকে জানিয়েছি।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম বলেন, রেগুলেটরের গেট খুলতে না পারার বিষয়টি অবগত হয়েছি। মেরামতের জন্য লোকজন খবর দেওয়া হয়েছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে। বোরো আবাদে কৃষকদের পানির অভাব কাটবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৮
এসআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।