দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এবছর জেলায় এক লাখ ৭৩ হাজার ৭৯১ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৫৫ হাজার ৮৫৫ হেক্টর উফশী ও ১৭ হাজার ৯৩৬ হেক্টর হাইব্রিড জাত রয়েছে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার মাশিমপুর, সিকদারহাট, গোপালগঞ্জ, বিরল উপজেলার তেঘরা, বাজনাহারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ধান উৎপাদনকারী শ্রেষ্ঠ জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে মাঠে মাঠে এখন ধান রোপণের মহোৎসব চলছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে সব জমিতে রোপণ কাজ শেষ হবে। এরই মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ জমিতে বোরো রোপণ করা হয়েছে।
তবে নারী শ্রমিক ও কৃষাণীদের মজুরি বৈষম্য নিয়ে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। কিছু কিছু এলাকায় পুরুষ শ্রমিকদের চেয়ে নারী শ্রমিকদের মজুরি অনেক কম দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
দিনাজপুর সদর উপজেলার মাশিমপুর গ্রামের কৃষাণী সখিনা বেগম অভিযোগ করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘প্রতিবছর মানুষের জমিতে ধানের চারা রোপণ করি। অন্যান্যবার মজুরি ঠিক দেখা হলেও এবছর পুরুষদের চেয়ে আমাদের অনেক কম মজুরি দেওয়া হচ্ছে। একজন পুরুষ সারাদিন কাজ করে পান ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা। অথচ নারী শ্রমিকদের সারাদিনের কাজ করে দেওয়া হয় ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা। ’
বিরল উপজেলার তেঘরা গ্রামের আরেক কৃষাণী করিমা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা অন্যান্যবার পুরুষের মতো মজুরি পেলেও এবার সব জায়গায় আমাদের অনেক কম মজুরি দেওয়া হচ্ছে। অথচ পুরুষদের মতোই আমাদের কাজ করতে হয়। বর্তমান যুগে নারী-পুরুষ সব জায়গায় সমান সুযোগ পায়। কিন্তু আমাদের মজুরি বৈষম্য কেন?’
সদর উপজেলার শিকদারহাট গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে বলেন, ‘তিন নারী ও পাঁচ পুরুষ শ্রমিক দিয়ে নিজের জমিতে বোরো রোপণ করলাম। এ বছর নারী শ্রমিকদের ২৬০ টাকা ও পুরুষ শ্রমিকদের ৩৮০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জমির মালিকরা যেভাবে মজুরি দিয়েছেন আমিও সেভাবেই দিয়েছি। ’
দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তৌহিদুল ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ২০ শতাংশ জমিতে বোরো রোপণ করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী এক মাসের মধ্যে বাকি জমিতে বোরো রোপণ করা হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কৃষকদের পরামর্শ দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৯
জিপি