এছাড়াও মরিচ, বাদাম, ডালসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করেন স্থানীয় কৃষকরা। চলতি রবি মৌসুমে লক্ষ্মীপুরের ৫টি উপজেলায় ৮৮ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে রবি ফসলের আবাদ হচ্ছে।
কৃষি সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, আবহাওয়া ও ঋতুর উপর নির্ভর করে দেশের কৃষি মৌসুমকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মৌসুমগুলো হচ্ছে রবি মৌসুম, খরিপ-১ ও খরিফ-২ মৌসুম। ১৬ অক্টোবর হতে ১৫ মার্চ (কার্তিক মাস থেকে ফাল্গুন মাস) পর্যন্ত এ সময়কালকে রবি মৌসুম বলা হয়। লক্ষ্মীপুরে রবি মৌসুমে পেঁয়াজ, রসুন, শাকসবজি ছাড়াও দানাশস্য গম, মূলজাতীয় ফসল আলু, মিষ্টিআলু, তৈলবীজ সরিষা, তিল, চীনাবাদাম, সূর্যমুখী, তিসি, সয়াবিন, ডালজাতীয় ফসল খেসারি, মুগডাল এছাড়াও তরমুজ খিরা ও শসার আবাদ হয়ে থাকে।
আমন ধান ঘরে তোলার পরেই এখানকার কৃষকরা ব্যাপকভাবে রবি ফসল উৎপাদনের প্রস্তুতি নেয়। স্থানীয় কৃষকরা এখন রবি ফসল রোপণে ব্যস্ত, করছেন পরিচর্যাও।
লক্ষ্মীপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ৪৫ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে সয়াবিনের চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ৬ হাজর ৫৬০ হেক্টর, রায়পুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর, রামগঞ্জে ৮৫ হেক্টর, রামগতি ১৮ হাজার ১৯০ হেক্টর ও কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে ১৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদের লক্ষ্যামাত্রা নির্ধারণ করা হয়। জেলায় বিভিন্ন উপজেলায় ৩ হাজার ৯৫২ হেক্টর জমিতে চিনাবাদাম আবাদের লক্ষ্যামাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিন আবাদ হয়েছে।
আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সয়াবিনসহ অন্যান্য রবি ফসলের আবাদ ৯০ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে জানাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন, তোরাবগঞ্জ, চর কাদিরা, চর জাঙ্গালিয়া, চর ফলকন, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরউভূতি, মিয়ার বেড়ি, ভবানীগঞ্জ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কৃষকরা রবি শস্য ফলাতে ব্যস্ত। কেউ করছেন সয়াবিন ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার আবার কেউ করছেন বীজ রোপণ। এছাড়া মরিচের চারা ও বাদাম বীজ বুনতে দেখা যায় স্থানীয় কৃষকদের।
স্থানীয় কৃষকরা বাংলানিউজকে জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, পোকামাকড় আক্রমন না করলে রবি ফসলের বাম্পার ফলন হয়। ধানের চেয়ে রবি ফসলে আয় বেশি, যে কারণে এই মৌসুমে জমি অনাবাদি থাকে না।
কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয় কৃষকরা রবি মৌসুম আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বাম্পার ফলনের লক্ষ্যে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। রোগবালাই প্রতিরোধ ও পোকামাকড় আক্রমণ যাতে না করতে পারে এসব ব্যাপারে কৃষকদের আগাম প্রস্তুত থাকতে বলা হয়। তাদের সার ও কীটনাশকের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করা হচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক মো. বেলাল হোসেন খান বাংলানিউজকে বলেন, লক্ষ্মীপুর রবি ফসল উৎপাদনে উপযোগী। এখানে সয়াবিনসহ বিভিন্ন রবি শস্যের ব্যাপক উৎপাদন হয়ে থাকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। ভালো ফলনের জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছেন। এছাড়াও কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের কল্যাণে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এসআর/এএটি