বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি (রোববার) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে নাটোর সদর, নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলার বেশ কিছু এলাকার ওপর দিয়ে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়।
শিলাবৃষ্টিতে তিন উপজেলায় মোট আক্রান্ত জমির পরিমাণ দুই হাজার ৭৭৪ হেক্টর। মোট বিনষ্ট দুই হাজার ৩২২ দশমিক ৩৭ হেক্টর জমি। এরমধ্যে দুই হাজার ৬৫ দশমিক ১ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ৪১৩ দশমিক ৯ হেক্টর।
সদর উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা আট হাজার ৩৪০ জন, সম্পূর্ণ ক্ষতির পরিমাণ এক হাজার ১১২ দশমিক ১ হেক্টর, আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ২৭৭ দশমিক ৯ হেক্টর, মোট বিনষ্ট জমির পরিমাণ এক হাজার ২৮৪ দশমিক ৬৭ হেক্টর, মোট উৎপাদন ক্ষতি সাত হাজার ৯০৪ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন এবং মোট ২২ কোটি ১১ লাখ ৯ হাজার ৭৫ টাকার ফসল ক্ষতি হয়েছে।
নলডাঙ্গা উপজেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা সাত হাজার ৭৪০ জন, সম্পূর্ণ ক্ষতির পরিমাণ ৯১০ হেক্টর, আংশিক ক্ষতি ৮৫ হেক্টর, মোট বিনষ্ট জমির পরিমাণ ৯৫৭ দশমিক ২ হেক্টর, মোট উৎপাদন ক্ষতি ১৫ হাজার ৮৯২ দশমিক ৮ মেট্রিক টন ও মোট ৩২ কোটি ৫০ লাখ ৬৮ হাজার টাকার ফসল ক্ষতি হয়েছে।
এ উপজেলার পিপরুল ইউনিয়নের পিপরুল, পাটুল, হাপানিয়া, ভূষণগাছা, আচড়াখালি, কালীগঞ্জ, ঠাকুরলক্ষ্মিকোলসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম এবং খাজুরা ইউনিয়নের করেরগ্রাম, গোয়ালঘাট, বামুনগ্রাম, হাটবিলা, পারবিশাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে ঘরের চালা ফুটো হওয়াসহ রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সিংড়া উপজেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৮৬৫ জন, সম্পূর্ণ ক্ষতির পরিমাণ ৪৩ হেক্টর জমি, আংশিক ক্ষতি ৫১ হেক্টর, মোট বিনষ্ট জমির পরিমাণ ৮০ দশমিক ৫ হেক্টর, মোট উৎপাদন ক্ষতি ৯২৫ মেট্রিক টন ও মোট ২০ কোটি ৭০ হাজার টাকার ফসল ক্ষতি হয়েছে।
এ উপজেলার চৌগ্রাম, হুলহুলিয়া, ভাগনগরকান্দি, খরমকুড়ি, কলম, কালিনগর, দাজপুর, লালোর, ডাকমন্ডপ, বারইহাটিসহ অন্তত ২০টি গ্রামে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়। এতে ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে বলেন, তিনটি উপজেলার ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তারাই দেখবেন।
ফসলের ক্ষতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিলাবৃষ্টিতে গম, পেঁয়াজ ও ভুট্টার সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধান কুশি অবস্থায় থাকায় তা রিকভারি হবে। এজন্য বোরো ধানের কোন ক্ষতি হবে না। তবে অন্যান্য ফসলের রিকভারি হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৯
জিপি