ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আশায় বুক বেঁধে বোরো চাষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৯
আশায় বুক বেঁধে বোরো চাষ ধানের চারা তুলছেন কৃষক-ছবি-বাংলানিউজ

বগুড়া: উত্তরাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার খ্যাত জেলা বগুড়া। ঋতু বৈচিত্র্যের ধারায় যখন যে মৌসুম তখন সেই মৌসুমের ফসল চাষ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন এখানকার কৃষকরা। তারই ধারাবাহিকতায় এখন তারা ব্যস্ত বোরো মৌসুমের ধান চাষ নিয়ে। তবে গেলো মৌসুমে প্রায় সব ধরনের ফসলের বাম্পার ফলন হলেও দামে বেশ মার খেয়েছেন চাষিরা।

তাই বলে তো আর কৃষকদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। কারণ ফসল ফলিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।

এ জন্য লাভ-লোকসানের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে পুরোদমে বোরোর মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন কৃষকরা। ফলে বরাবরের মতোই আশায় বুক বেঁধে বোরো চাষে আবারও মাঠে নেমেছেন চাষি।

বিশেষ করে গত রোপা-আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হলেও দামে প্রচণ্ড মার খেয়েছেন তারা। বিঘা প্রতি প্রায় ৪-৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান গুণতে হয়েছে তাদের। আবার আলুসহ বেশ কয়েক জাতের সবজির ক্ষেত্রেও লোকসান গুণতে হয়েছে অনেক কৃষককে।

বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য ওঠে আসে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে এ জেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৮৯ হাজার ২৮ হেক্টর জমি। বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৪৮ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান লাগানো হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক বাবলু সূত্রধর বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে এ জেলায় বিআর-২৮, ২৯, ব্রিধান-৫৮সহ বেশ কয়েক জাতের ধান লাগানো হয়েছে। একেক উপজেলায় কৃষকরা একেক জাতের ধানকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

সে অনুযায়ী নিজেদের পছন্দ জাতের ধান চাষ করেন তারা। আসছে মার্চের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কৃষকরা চলতি মৌসুমের ধান লাগাবেন। অবশ্য কোনো কোনো কৃষক আরো কিছু দিন ধান লাগিয়ে যাবেন বলে জানান কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা।    

সরেজমিনে দেখা যায়, মৌসুমের শেষ দিকে এসে ধান লাগানোর কাজ গুটিয়ে ফেলতে কৃষকদের মধ্যে চলছে চরম তোড়জোড়। চলছে ধান লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুতির কাজ। অন্যদিকে চলছে বীজতলা থেকে চারা উঠানো। সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষকরা শীত-রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে একের পর এক জমিতে চারা লাগিয়ে বিস্তীর্ণ মাঠ সবুজে ছেয়ে ফেলছেন তারা। এক কথায় দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের।

কৃষক অকফের আলী বাংলানিউজকে জানান, জমিতে ধান লাগাতে টাকা ব্যয় করতে হয় পর্যায়ক্রমে। আর ফসল তোলার পর তা বিক্রি করলে এক মোটে টাকা পাওয়া যায়। একযোগে টাকাগুলো পাওয়াতে তা ভালোভাবে কাজে লাগানো যায়। এ কারণে লোকসান হলেও গায়ে সহ্য হয়।

জসিম উদ্দিন নামের আরেক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, কৃষি কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজকর্ম জানা নেই। তাই ইচ্ছে করলেই একটা কিছু করা যায় না। এ পেশা পরিবর্তন করা যায়। ফলে লোকসান মেনেই জমিতে পা রাখতে হয়।

কৃষক ফজলুল হক বাংলানিউজকে জানান, সব বছরই তো আর লোকসান হয় না। আবার সব ফসলেও লোকসান হয় না। অনেক বছর ভালো লাভ হবে। সেই লাভের আশায় বুক বেঁধে জমিতে ধান লাগানোর কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছেন এই কৃষক।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৯
এমবিএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।